দুই ভবনের ফাঁকে আটকা মাদক ব্যসায়ীকে দেয়াল ভেঙে উদ্ধার


পিবিএ, চাঁদপুর: মাদক বিরোধী অভিযানে পুলিশের হাত থেকে বাঁচাতে ছাদের উপর দিয়ে পালাতে গিয়ে দুই ভবনের দেয়ালে ফাঁকে পড়ে আটকে যায় সিস্টেম খোকন নামে এক ব্যক্তি। পুলিশের দাবি সে তালিকাভূক্ত চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উপজেলার উত্তর ঠাকুর বাজারে এলাকায় একটি পরিত্যক্ত হিন্দু বাড়ীতে এ ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ওই দিন রাতে গোপন সংবাদদের ভিত্তিতে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ শেখ রাসেলের নেতৃত্বে মাদক বিরোধী অভিযানে নামে শাহরাস্তি থানার ওসি মো. শাহআলম (এলএলবি)সহ একটি ফোর্স। পুলিশ পৌর এলাকার পূর্ব উপলতা কাজী বাড়ির খোকন ওরফে সিষ্টেম খোকন (৫২)সহ কয়েকজন একই এলাকায় একটি পরিত্যাক্ত হিন্দু বাড়ীতে মাদক সেবন করছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন মাদকসেবি পালিয়ে গেলেও নিজেকে লুকাতে গিয়ে পরিত্যাক্ত দুই ভবনের মাঝখানে মরণ ফাঁদে আটকে যায় খোকন।

রাত ১১ টায় ঘটনাটি জানাজানি হলে পুলিশ তাকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। আটকে পড়া খোকনকে বাঁচাতে ছুটে আসে শাহরাস্তি ফায়ার সার্ভিস। তারা তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হলে তাদের সাথে যোগ দেয় হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস। শেষ পর্যন্ত তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে সিস্টেম খোকনকে জীবিত উদ্ধার করতে ওরস্যালাইন তৈরী করে পাইপের মাধ্যমে তাকে খাওয়ানো হয়। উপর থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় ফ্যান দিয়ে বাতাস দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

শেষ পর্যন্ত শাহরাস্তি ফায়ার সার্ভিসের লিডার মোতালেব তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষ দলটি দেয়াল কেটে তাকে বের করে আনে। এ সময় পর্যন্ত ঘটনাটি জানাজানি হলে শত শত মানুষ খোকনকে উদ্ধার অভিযান স্ব-চোখে দেখতে ভীড় জমায়। প্রায় আড়াই ঘন্টা উদ্ধার অভিযান শেষে রাত দেড়টায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ শেখ রাসেল বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে যাই এবং ওই বিল্ডিংয়ের সম্ভাব্য সকল কক্ষ তল্লাশি করি। এক পর্যায়ে খোকনকে দুই বিল্ডিংয়ের মাঝখানে আটকে থাকতে দেখি। প্রায় আড়াই ঘন্টা ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট যৌথ ভাবে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযানের বিষয়টি তদারকী করেন চাঁদপুর পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম।

এলাকাবাসি জানান, সিস্টেম খোকন পুলিশের তালিকাভূক্ত একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশ মানবতা দেখিয়ে তাকে যেভাবে উদ্ধার করেছে তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। যদি সে এবার জেলে গিয়ে ভালো না হয়, তাহলে আর ভালো হওয়ার লক্ষণ নেই। কারণ আল্লাহ তাকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফেরত এনেছে। পুলিশ যদি স্যালাইনের পানি আর কৃত্রিম বাতাসের ব্যবস্থা না করতো তাহলে তার মৃত্যু ছিল নিশ্চিত।

আরও পড়ুন...