দুই মেধাবীর আর্তনাদ, আমাদের কি স্বপ্ন পূরন হবেনা?

পিবিএ,নাটোর: নাটোর সদরের আগদীঘা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া দিনমজুর কন্যা মোছাঃ সুমা খাতুন ও একই স্কুলের একই বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিলা রানী বড় হয়ে উচ্চ শিক্ষা শেষ করে একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চায়।

সুমা খাতুনের বাবা নাটোর সদরের আগদীঘা গ্রামের শফিকুল ইসলাম একজন ভ্যান চালক। তার মা মোছাঃ নাসিমা বেগম অন্যের বাড়ি ও জমিতে দিনমুজুর হিসেবে কাজ করে। বাড়ির তিন কাঠা জমি ছাড়া তাদের কোন ফসলী জমি-জমা নাই। সুমা পরিবারের বড় সন্তান। জেএসসি ও পিএসসিতেও সুমা জিপিএ-৫ পেয়েছে।

দুই মেধাবীর আর্তনাদ, আমাদের কি স্বপ্ন পূরন হবেনা?
মোছাঃ সুমা খাতুন ও শিলা রানী

অপরদিকে শিলা রানীর বৃদ্ধ বাবা আর জমিতে কৃষি কাজ করতে পারেনা। মাও অসুস্থ। পরিবারে রোজগারের মত আর কেউ নেই। ছিলনা বই-খাতা ও কলম কেনার মতো সামর্থ। তাই নিয়মিত বান্ধবী সুরমা খাতুনের বই নিয়ে লেখা-পড়া করেছে শিলা রানী। বান্ধবীর বই পড়ে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার বাবা আগদীঘা গ্রামের আনন্দ প্রামনিক পেশায় কৃষক হলেও বয়সের ভারে এখন আর কাজ করতে পারেনা।

দু’কাঠা জমির ওপরে ছোট্ট নড়বড়ে একটি বাড়ি ছাড়া তাদের আর কোন সহায় সম্পত্তি নাই। সংসারে নেই কোন ছেলে সন্তানও। শিলারা পাঁচ বোন। বড় তিন বোনকে বিয়ে দিতেই বাবার সহায় সম্বল সব শেষ। বাকি দু’বোনের লেখা-পড়ার খরচ চালানোর মতো সক্ষমতা পরিবারের নেই। সুমা ও শিলা কে এতদিন বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজিজুল ইসলাম ও শাহিন আলী বই-খাতা কলম দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এবং তাদেরকে বিনা বেতনে প্রাইভেটও পড়িয়েছে।

তাদের দুজনের বাবা-মায়েরা জিপিএ-৫ কি না বুঝলেও শিক্ষক ও প্রতিবেশীদের আনন্দ প্রকাশে মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন মেয়েরা ভালো ফলাফল করেছে কিন্তু এখন নিজেদের সামান্য উপার্জন দিয়ে কিভাবে সন্তানকে উচ্চ শিক্ষা দিবেন সেই চিন্তায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বানেরা সুমা ও শিলার পাশে দাঁড়ালে তারা উচ্চ শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে নিজেদের একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন সফল হতে পারে।

পিবিএ/এ/আরআই

আরও পড়ুন...