দুই শ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী ব্যবস্থাপক মঞ্জু বড়ুয়া

পিবিএ,ঢাকা: দির্ঘ্য দুই শ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ভারতের আসামে চা বাগানে একজন নারী বাগান ব্যবস্থাপক পদে নিয়োগ পেয়েছেন। এতে চা বাগানের মতো কষ্টসাধ্য কাজের নেতৃত্বে নারীরা এগিয়ে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রায় দুই শ বছর আগে ব্রিটিশরা আসামে চা বাগান শুরু করেছিল । কিন্তু চা বাগান গুলোতে উচ্চপদে এত দিন শুধু পুরুষরাই কাজ করেছেন । নারী শ্রমিকরা পাতা সংগ্রহের মতো কঠিন পরিশ্রমের কাজই করেন। এত দিনের এই ব্যবস্থা বদলিয়ে এবার এক নারী দায়িত্ব নিয়েছেন চা বাগানের প্রধানের। ব্যবস্থাপকের পদে বসেছেন ৪৩ বছর বয়সী মঞ্জু বড়ুয়া। ৬৩৩ হেক্টরেরও বেশি জায়গাজুড়ে থাকা বাগানটির আনাচকানাচে মোটরবাইক বা সাইকেল অথবা জিপে চেপে ঘুরে বেড়ানোর কাজ তাঁর।

আসাম বা উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলোতে ব্যবস্থাপকদের সম্বোধন করা হয় বড় সাহেব বলে। একসময় ব্রিটিশরাই ওই পদে আসীন হতো, তাই এই সম্বোধন। এখন মঞ্জু বড়ুয়া ব্যবস্থাপকের পদে আসীন হওয়ার পর আসামের তিনসুকিয়া জেলার হিলিকা চা বাগানের শ্রমিক-কর্মচারীরা অভ্যস্ত হচ্ছে তাঁকে বড় ম্যাডাম বলতে।

মঞ্জু বড়ুয়া বলেন, চা বাগানের দায়দায়িত্ব সামলানো একজন নারীর জন্য কঠিন হলেও অসম্ভব কোনো কাজ নয়। এটা ঠিক যে এত দিন চা বাগানে পুরুষরাই ম্যানেজার হয়ে এসেছেন। পুরুষ হলে হয়তো কিছুটা সুবিধা থাকে। তবে নারীরা পারবেন না মোটেই এমন নয়। কিন্তু শারীরিক আর মানসিকভাবে ফিট থাকতে হবে। আর চা বাগানের কাজের প্রতি থাকতে হবে ভালোবাসাও।

শ্রমিক-কর্মচারীরা এত বছর ধরে বাগানের প্রধান হিসেবে একজন পুরুষকেই দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু নারী-পুরুষ-নির্বিশেষে সব শ্রমিকের সঙ্গে কাজ করার সুবাদে মঞ্জুর একটা গ্রহণযোগ্যতা আগে থেকেই তৈরি হয়। তাই নারী হিসেবে বড় কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে এখনো পড়তে হয়নি।

মঞ্জু বড়ুয়া জানান, তিনি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেছিলেন শ্রমিককল্যাণ অফিসার হওয়ার জন্য। কাজে যোগ দেওয়ার পর এই বাগানেই ১৮ বছর ধরে কাজ করছেন। একেবারে তৃণমূল স্তরে শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে মিশেছেন।

মঞ্জুদের বাগানটির মালিক কলকাতার এপিজে সুরেন্দ্র গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানের চেয়াম্যান করণ পল বলেন, ‘মঞ্জু বড়ুয়া যোগ্যতা দেখিয়েই এই পদে উঠে এসেছেন। সবটা তাঁরই কৃতিত্ব। কিন্তু চা বাগানের মতো একটা শিল্প, যেখানে পুরুষরাই মূলত মাথায় বসে এসেছেন এতকাল, সেখানে যদি মঞ্জু বড়ুয়ার সাফল্য দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্য নারীরাও এগিয়ে আসেন চা বাগানের গুরুদায়িত্ব সামলানোর মতো কাজে, সেটাই হবে আসল সাফল্য।

পিবিএ/ইএইচকে

আরও পড়ুন...