পিবিএ,খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার অপরুপ সৌন্দর্য্যে লীলাভুমি প্রকৃতির প্রাণ ফিরেছে চাঁদের গাড়ি চালকদেও, চাঁদের গাড়িতে ঘুরছেন পর্যটকেরা। প্রাণ ফিরে পেয়েছে সবুজ অরণ্যে ঘেরা পাহাড়ের পর্যটনকেন্দ্রগুলো। শুক্রবার(২৮শে আগষ্ট) পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে খাগড়াছড়ির অন্যতম ষ্পট প্রধান চার পর্যটন কেন্দ্র। এতে অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করেছে পর্যটকবাহী গাড়ি চালক, হোটেল-মোটেল ও মালিকদের।
পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার খবরে স্থানীয়দের পাশাপাশি খাগড়াছড়িতে আসতে শুরু করেছেন ভ্রমণপিপাসু পর্যটকেরা। দীর্ঘ ছয় মাস বন্ধ থাকার পর পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ায় পর্যটকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস পরিলক্ষিত হয়। এতে লাভবান হচ্ছেন চাঁদের গাড়ি চালক, হোটেল-মোটেল ও মালিকেরা।
চাঁদের গাড়ি চালক সজীব চাকমা বলেন, দীর্ঘ ছয় মাস পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকার কারণে আমাদের অর্থ উপার্জনের কোনো উপায় ছিলনা, যার ফলে অনেক কষ্টে দিন পার করতে হয়েছে। এখন পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার কারণে আমাদের অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করেছে।
পার্বত্য যানবাহন মালিক সমিতির গাড়ির মালিক পুলক দেওয়ান বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি বন্ধ থাকায় আমাদের চলতে খুব কষ্ট হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার ফলে আমাদের এতদিনের কষ্ট লাগব হবে আশা করছি।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য যানবাহন সমিতির সভাপতি ”্ঞ্চুমনি চাকমা বলেন, দর্শনার্থীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধানসহ খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছয়টি শর্ত বেঁধে দেয়া হয়েছে। এগুলো মেনে পর্যটকদের নিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু করা হয়েছে। আশা করছি সব শর্ত মেনে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে গাড়ি চলাচল করবে।
গত ৮ই মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার পর বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশের মতো খাগড়াছড়ির ১৮ই মার্চ ঘোষনা পর ১৯মার্চ থেকে সব পর্যটনকেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসন। একই সময় থেকে রাঙামাটির সাজেক পর্যটন কেন্দ্রও বন্ধ ছিল। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে পাহাড়ের পর্যটকবাহী গাড়ি চালক, হোটেল-মোটেল ও মালিকেরা।
এদিকে দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র রাঙামাটির ‘সাজেক ভ্যালি’ ছয় মাস নিষেধাজ্ঞার পর ১লা সেপ্টেম্বর থেকে খুলছে। এতে করে কর্মস্থলে ফিরবেন শতাধিক কটেজ-রিসোর্টে কর্মরতরা। গত বুধবার(২৬শে আগষ্ট) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ার নীতিগত সিন্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির বাঘাইছড়ির ইউএনও আহসান হাবিব(জিতু)।
তিনি জানান, ‘সাজেক ভ্যালি’ খুলে দেয়ার ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক রিসোর্ট মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ১লা সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেয়ার সিন্ধান্ত নেয়া হয়। একইসঙ্গে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও অনুরোধ করেন তিনি।
সাজেকে অবস্থিত অবকাশ রিসোর্টের সত্ত্বাধিকারী লালমিং ময়া পাংখো জানান, দেশের সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দিলেও সাজেক পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ছিল। খুলে দেয়ার সিন্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। দীর্ঘদিন করোনা মহামারির কারণে পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতির মুখে কটেজ-রিসোর্ট মালিকরা। খুলে দেয়ার ফলে ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ জানান, প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের সাজেকে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কটেজ-রিসোর্ট চালাতে পারবেন তারাই খুলতে পারবেন।
তিনি আরো জানান, ছয় মাস নিষেধাজ্ঞা থাকায় এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাও বেকায়দায় পড়েছে। অনেকেই বাধ্য হয়ে কর্মচারী ছাটাইও করেছেন। এখন আবার সাজেক খুলেছে। শতাধিক কটেজ-রিসোর্টসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সকল যানবাহন চালকরাও কাজে ফিরবেন।
পিবিএ/চাইথোয়াই মারমা/এসডি