পিবিএ ঢাকা: দেশে যে কোনো সময় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে! গত ২১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা পর্যন্ত চীন থেকে মোট পাঁচ হাজার ৫৪৬ চীনা নাগরিক ও বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।
সরকারি হিসেবে চায়না ইস্টার্ন, চায়না সাউদার্ন, ড্রাগন এয়ার ও ইউএস বাংলা-এ চার ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের হিসাব করা হচ্ছে। বিমানবন্দরের থার্মাল স্ক্যানার ও হ্যান্ড স্ক্যানারে শুধুমাত্র এ চার ফ্লাইটের যাত্রীদের স্ক্যানিং ও নিবিড়ভাবে স্ক্যানিং করা হচ্ছে।
কিন্তু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এ চারটি ফ্লাইট ছাড়াও আরও কমপক্ষে পাঁচটি ফ্লাইটে চীন থেকে যাত্রী পরিবহনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) নেপালের হিমালিয়ান ফ্লাইটে চীনে অধ্যয়নরত কমপক্ষে ১৬ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দেশে ফিরেন। তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের থাইল্যান্ড হয়ে দেশে ফেরার কথা জানান।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের কবল থেকে রক্ষা ও রোগটি যেন সংক্রমিত না হয় সেই উপলব্ধি থেকেই তারা বিকল্প পথে দেশে ফেরার কথা জানান।
শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এখন পর্যন্ত মোট ৯টি ফ্লাইটে চীন থেকে যাত্রী আসার তথ্য পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ায় এখন সব ফ্লাইটের রোগীদের স্ক্যানিংয়ের আওতায় আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) চীনের উহান প্রদেশ থেকে বিমান বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ৩১২ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ৩০২ জনকে দক্ষিণখানের আশকোনা হজ কাম্পে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে। বাকি দশজনের মধ্যে সাতজনকে সরকারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও তিনজনকে (তিনজনের মধ্যে একজন মহিলা জ্বরের রোগী, তার সঙ্গে তার স্বামী ও শিশু সন্তান ইচ্ছে করেই হাসপাতালে অবস্থান করছেন) সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আশকোনা হজ ক্যাম্পে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আর্ম মেডিকেল কোরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও রোগতত্ত্ববিদরা সকলের সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, চীন থেকে ফেরা যাত্রীদের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি সব সময় রয়েছে। যারা চীন থেকে ফিরছেন তাদের সকলকে কোয়ারেন্টাইন করা হচ্ছে না। এছাড়া এ রোগটির উপসর্গ দুই সপ্তাহের মধ্যে যে কোনো সময় দেখা দিতে পারে। এ কারণে যার গায়ে জ্বর নেই তাকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তার উপসর্গ পরেও দেখা দিতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার আগাম সর্বোচ্চ সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এরপর যদি রোগী পাওয়া যায় তাদেরকে আইসোলেশন ইউনিটে রেখে চিকিৎসার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন সব এয়ারলাইন্সের যাত্রীদেরকেই পরীক্ষা নিরীক্ষারও আওতায় আনতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বিকেলে এয়ারলাইন্সগুলোর কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
পিবিএ/এমআর