সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসর তো অনেকে আছেন, যারা এখনও বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে কেন এত ব্যস্ততা?
সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর আজিমপুরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও চিকিৎসা বিষয়ক লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রশ্ন তোলেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল করেছেন সেখানে অনেকের বিচার হবে। কিন্তু সেখানে যদি কাজের বদলে অকাজে বেশি লিপ্ত হয়ে রাজনৈতিক শূন্যতা, সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করি তাহলে তো জনগণ কথা বলতে শুরু করবে।
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার ১/১১ সরকারের সময় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন, শেখ হাসিনার আমলেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। তাকে আপনারা উপদেষ্টা বানিয়েছেন। এইরকম তো অনেকেই রয়েছেন, যাদের বিষয়ে আপনারা তো কিছু বলেন না। শেখ হাসিনার রক্তাক্ত দুঃশাসনকে যারা প্রলম্বিত করেছে, টু শব্দ করেনি। যারা নিঃস্বার্থভাবে শেখ হাসিনার তাঁবেদারি করেছে তারা তো এখনো বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, আজকে রাষ্ট্রপতি থাকলে কি থাকল না এটা নিয়ে কেন জটিলতা তৈরি করছি? কেন আমরা দেশে সংকট ডেকে নিয়ে আসব। এটা মুখ্য বিষয় নয়। শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে তাড়িয়েছি, তার দোসরদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার করা হচ্ছে আমাদের দায়িত্ব।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যে সমস্ত গণমাধ্যম নির্লজ্জের মতো শেখ হাসিনার চামচামি করেছে, তার প্রতিটি অপকর্মকে যারা বৈধতা দান করেছে, কই তাদের বিষয়ে তো আপনারা কিছু বলেন না। ৭১ টেলিভিশনসহ আরও বিভিন্ন টেলিভিশনে আমরা যেভাবে শেখ হাসিনার সুনাম করতে দেখেছি, সেখানে বড় বড় সাংবাদিকরা ছিলেন, মিডিয়ার অনেক নামকরা লোক ছিলেন, কই তাদের বিষয়ে তো কিছু বলছেন না। শুধু রাষ্ট্রপতিকে নিয়েই আপনারা ব্যস্ত আছেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের যাত্রাপথে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের অবদান এ দেশের মানুষ ইতিহাসে লিখবে। একটা সোনালী অধ্যায় রচিত হবে। কিন্তু আবেগের বশবর্তী হয়ে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল সংবিধান বহির্ভূত কোনো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
রিজভী বলেন, ছাত্রজনতার আন্দোলনের পরে আমরা কিছুটা হলেও নিশ্বাস নিতে পারছি। কিন্তু এই আন্দোলনকে অতিরঞ্জিত কিছু করার কারণে কোনোভাবেই যেন ব্যর্থ না হয় এজন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই সতর্ক থাকতে হবে। কারণ শেখ হাসিনা বসে নেই, তার আশ্রয়দাতারা বসে নেই।
লিফলেট বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন প্রমুখ।