ধর্মঘটেও চলবে লঞ্চ

পিবিএ,ঢাকা: পূর্ব ঘোষিত ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নৌযান শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের মধ্যেও লঞ্চ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিকপক্ষ। অন্যদিকে ধর্মঘট আহ্বানকারী নৌশ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।

১১ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন মঙ্গলবার প্রথম প্রহর থেকে ধর্মঘট শুরু করায় সারাদেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। কর্মবিরতির কারণে ভোর থেকে বরিশাল নদী বন্দর থেকে স্থানীয় এবং অভ্যন্তরীণ রুটের কোনো নৌযান ছেড়ে যায়নি। লঞ্চঘাট থেকে সব ধরনের নৌযান সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ কারণে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক দিনেশ কুমার সাহা বলেন, ‘সকালে সদরঘাটে অনেক যাত্রী এসেছিল। কিন্তু লঞ্চ না চলায় তারা ফিরে যান। তবে দুপুরে যাত্রীবাহী লঞ্চের মালিকরা তাদের নৌযান চালানোর সিদ্ধান্ত জানান। এরপর সদরঘাট পন্টুনে ভিড়তে শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি লঞ্চ।

ধর্মঘট প্রত্যাহারে বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ পরিদর্শক দিনেশ বলেন, ‘শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেনি। তবে কিছু লঞ্চ পন্টুনে ভিড়েছে। বরগুনা, হাতিয়া, বেতুয়া, বোরহান উদ্দিন, বরিশাল, ঝালকাঠি রুটের এমভি জাহিদ ৮, রনধূত, ফারহান ৩, ৬, ১০ ও ১২ রাশেদ ১, টিপু ৭ লঞ্চগুলো পন্টুনে দেখা গেছে।

এমভি টিপু-৭ এর মহাব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, বিকেল সোয়া ৫টা থেকে সদরঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে যাবে। শ্রমিকরা তো দাবি নিয়ে মালিক বা সরকারের কাছে বসছে না। সোমবার শ্রম পরিদফতরে মিটিং হয়েছে, সেখানেও তারা উপস্থিত ছিল না।”

মালিকদের এই অবস্থানেও ধর্মঘটে অটল থাকার কথা জানান মিতালী লঞ্চের মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের ধর্মঘট চলছে। এখন কিছু মালিক লস্কর ও ডকে পড়ে থাকা বেকার মাস্টার দিয়ে লঞ্চ চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এখন দেখা যাক কী হয়? আর পন্টুনে লঞ্চ ভিড়লেই তো হবে না, ছেড়ে যাওয়ার মতো যাত্রীও তো পেতে হবে।’

আন্দোলনরত নৌ শ্রমিকরা জানান, আসলে তাদের এই কর্মবিরতি শুরু হয়েছে গত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে। ওই সময় পর্যন্ত তাদের আল্টিমেটাম দেয়া ছিল। তারা আরও জানান, ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর একইভাবে কর্মবিরতি দেয়া হয়েছিল। এরপর সরকার ও মালিক পক্ষ কয়েকটি সভা করে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়। সে কারণে কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছিল। সে সময়ে দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় আজ থেকে আবার কর্মবিরতি শুরু হয়েছে।

দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ করা, নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাসসহ জাহাজে কর্মরত শ্রমিকদের ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করা, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় মৃত নৌ শ্রমিকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান, নৌ শ্রমিকদের ভাতা পুনঃনির্ধারণ এবং সমুদ্র্র ভাতা ও রাত্রীকালীন ভাতা পুনঃনির্ধারণসহ ১১ দফা।
পিবিএ/এএম

আরও পড়ুন...