ধর্ম বিশ্বাস বদলাতে চীনে মুসলমান শিশুদের পরিবার থেকে আলাদা করা হচ্ছে

পিবিএ ডেস্ক: চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিম শিশুদের পরিবার থেকে আলাদা করছে সরকার। তাদের আচরণ, ধর্ম বিশ্বাস ও ভাষা বদলে দিতেই এমনটা করা হচ্ছে বলে এক গবেষণায় জানা গেছে। শুক্রবার বিবিসির এক রিপোর্টে বলা হয়েছে একথা।

কয়েক মাস আগেই খবর বের হয়েছে চীনের মুসলিম প্রধান জিনজিয়াংয়ে মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্কদের লক্ষাধিক লোককে ডিটেনশক ক্যাম্পে আটকে রেখেছে সরকার। চীন বলছে, আচরণগত সংশোধনের জন্য তাদের সেখান রাখা হয়েছে। সে সময় বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে এই খবরে। জিনজিয়াং চীনের মুসলিম প্রধান প্রদেশ। সেখানে ‍উইঘুর মুসলিমদের বসবাস। ‍উইঘুরদের ওপর অনেক দিন ঘরেই নানারকম নিপীড়নের খবর আসছে মিডিয়ায়।

জিনজিয়াংয়ে মুসলমান শিশুদের পৃথক করার বিষয়ে বিদেশে অবস্থানরত পরিবারগুলোর সাথে কথা বলেছে বিবিসি। স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত কিছু প্রমাণও জোগাড় করেছ তারা। সেসব প্রমাণে দেখা গেছে, একটি ছোট শহরের চার শ’র বেশি শিশুর পিতা-মাতা হয় কোন ক্যাম্পে বা জেলখানায় বন্দী আছেন। শিশুদের সমন্বিত কোনো যত্নের প্রয়োজন আছে কি না, তা আনুষ্ঠানিক মূল্যায়নের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়।

জিনজিয়াংয়ে এর আগেও প্রাপ্ত বয়স্কদের মুসলমানদের ধর্ম থেকে দূরে রাখা চেষ্টার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এবার শিশুদের তাদের শেকড় থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয় গেল।

বিবিসি বলছে, চীনে- বিশেষ করে জিনজিয়াংয়ে বিদেশী সাংবাদিকদের ওপর ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করা হয়। তাই তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন। তবে তুরস্কে অবস্থারত উইঘুরদের অনেকের সাথে কথা বলেছে তারা।

ইস্তাম্বুলে বড় একটি হলরুমে একডজনের বেশি লোক তাদের গল্প বলেছেন। তাদের অনেকের সন্তান পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চীনে রয়ে গেছে। তিন সন্তানের ছবি দেখিয়ে এক মা বলেন, ‘সেখানে তাদের দেখাশোনা কে করছে জানি না। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।’ তিন ছেলে ও এক মেয়ের ছবি দেখিয়ে আরেক মা বলেন, ‘আমি শুনেছি তাদের এক এতিমখানায় রাখা হয়েছে।’

৬০টির মতো পৃথক সাক্ষাৎকারে ১০০টি শিশুর উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা শোনা যায়।

চীনা কর্তৃপক্ষ বলছে, সহিংস ধর্মীয় উগ্রপন্থা ঠেকাতে উইঘুরদের ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। তবে যেসব প্রমাণ পাওয়া যায় তাতে দেখা যায়, অনেকেই ধর্মীয় বিশ্বাস, প্রার্থনা বা পর্দা করার মতো কারণে ক্যাম্পে আটক রয়েছেন। অনেকের আবার তুরস্কের সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় ক্যাম্পে আটক থাকতে হচ্ছে। যাঁরা সেখানে আছেন, তাঁদের বিদেশে কথা বলাও ভয়ানক বিপদের কারণ।
উইঘুরদের ওপর আগে থেকেই কঠোর নজরদারি করে আসছে চীন। তাদের ধর্মীয় বিধিবিধান পালনেও রয়েছে নানারকম বাধা। বিবিসির অর্থায়নে পরিচালিত হয়েছে এই গবেষণাটি।

পিবিএ/বাখ

আরও পড়ুন...

preload imagepreload image