ধর্ষণে অভিযুক্ত সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার

 

Manikganj policemen withdrawn-PBA

মনিরুল ইসলাম মিহির,পিবিএ,মানিকগঞ্জ: সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ডাকবাংলোতে আটকিয়ে রেখে তরুণীকে জোর করে ইয়াবা সেবনে করিয়ে ধর্ষন করার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন পুলিশের তদন্ত কমিটি সদস্যরা। নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী সোমবার রাতে সাটুরিয়া থানায় অভিযুক্ত ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা সাটুরিয়া থানায় উপপুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপপুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। রাতেই অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার পর রাতে ওই তরুনীর ডাক্তারী পরীক্ষাও সম্পন্ন করা হয়েছে।

রোববার পুলিশ সুপারের কাছে নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিত্বে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান ও ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হামিদুর রহমান সিদ্দীকী সোমবার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেন।

মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান জানান, সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হয়। তদন্ত কমিটির কাছে নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী তার উপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন। দিনভর প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে ওই তরুণীর পুলিশ সুপারের কাছে যে অভিযোগ করেছেন তার সত্যতা রয়েছে। এব্যাপারের ওই তরুণী সাটুরিয়া থানায় উপপুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপপুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামকে আসামী করে মামলা করেছেন।

পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, মামলার পরই অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। তাদের মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আদালতে তোলা হবে।

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক লুৎফর রহমান জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ওই তরুণীর ডাক্তারী পরীক্ষা করা হয়। ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর ডাক্তারী পরীক্ষার সময় তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গাইনী কন্সালটেন্ট নাসিমা আক্তার, দন্ত সার্জেন্ট ডাক্তার রফিকুল ইসলাম, রেডিওলজিষ্ট ডাক্তার হেলাল উদ্দিন ভূইয়া। এই মেডিকেল বোর্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি রিপোর্ট দিবেন।

মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান জানান, সোমবার রাতেই ওই তরুণীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর সে বাড়ি চলে গেছে।

উল্লেখ্য যে, উপপুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন আশুলিয়া থানায় কর্মরত থাকার সময় এক নারীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা হাওলাদ নিয়ে জমি কিনেন। কথা ছিল জমি বিক্রির লাভ তাকে দেওয়া হবে। সেই হিসাবে তিনি সেকেন্দার হোসেনের কাছে প্রায় তিন লাখ টাকা পাবেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে ঘুরাতে থাকেন। সাটুরিয়া থানায় বদলি হয়ে আসার পরও সেকেন্দারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। বুধবার বিকেলে প্রতিবেশী ভাগ্নিকে নিয়ে সাটুরিয়া থানায় আসেন ওই নারী। এর পর সেকেন্দারের সাথে যোগাযোগ করা হলে সে টাকা দিবে বলে তাদের সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে নিয়ে যান। সন্ধ্যার পর সাটুরিয়া থানার এএসআই মাজহারুল ইসলামকে ডাকবাংলোতে নিয়ে যায় সেকেন্দার হোসেন। সেখানে ডাকবাংলোর একটি কক্ষে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ইয়াবা সেবন করে ও তার সাথে আসা ওই তরুণীকে জোড় করে ইয়াবা সেবন করায়। দুই পুলিশ কর্মকর্তা ওই তরুণীকে দুই দিন আটকিয়ে রেখে ধর্ষণ করে।

পিবিএ/এফএস

আরও পড়ুন...