ধানের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ ও ধান ফেলে বিক্ষোভ

পিবিএ,বেরোবি (রংপুর): ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত এবং সরকারী উদ্যোগে হাটে হাটে ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের দাবিতে আজ ১৬ মে ২০১৯ সকাল ১১ টায় রংপুর নগরীর সাতমাথায় কৃষক সংগ্রাম পরিষদ মহাসড়ক অবরোধ ও ধান ফেলে বিক্ষোভ করে।

অবরোধ চলাকালে কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক আব্দুস সাত্তার বকুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কৃষক সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা পলাশ কান্তি নাগ, সদস্য সাত্তার প্রামাণিক, আতোয়ার মিয়া বাবু, জাকির হোসেন, আবু তালেব, শফিকুল ইসলাম,নিপীড়ণ বিরোধী নারী মঞ্চের আহবায়ক নন্দিনী দাস,সদস্য সচিব সানজিদা আক্তার,শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য সদস্য সচিব সুভাষ রায়,সবুজ হাসান সাগর প্রমুখ।

ধানের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ ও ধান ফেলে বিক্ষোভ
মহাসড়ক অবরোধ ও ধান ফেলে বিক্ষোভ

সমাবেশে সংগঠনের উপদেষ্টা পলাশ কান্তি নাগ বলেন, প্রতিবছর উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া কৃষকের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সার,ডিজেল,কীটনাশকসহ প্রতিটি কৃষি উপকরণের মূল্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষক আবাদ করতে গিয়ে ঋণের জালে জর্জরিত হচ্ছে।এ বছর প্রতিমণ ধান উৎপাদনে কৃষকের ব্যয় হয়েছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা।অথচ দাম না থাকায় প্রতিমণ ধান কৃষক ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

সরকার প্রতিমণ ধান ১০৪০ টাকা দরে ক্রয়ের ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত ক্রয় করা শুরু করেনি। তাছাড়া যে প্রক্রিয়ায় সরকার ক্রয় করবে এতে বড় ব্যবসায়ী, মধ্যস্বত্ত্বভোগী,ফরিয়া ও দালালরা লাভবান হবে। এ অবস্থায় সরকারের উচিত মূল্য সহায়তা দিয়ে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা।

কৃষক সাত্তার প্রামাণিক বলেন, একমন ধানের মূল্যের চেয়ে একজন কামলার মজুরী বেশী। একমণ ধান বিক্রি করে এক কেজি গরুর মাংস কিনতে পারি না। কৃষক আবু তালেব বলেন,সরকার যদি কৃষক বান্ধব হয় তাহলে কৃষকের দুর্দিনে সরকারের ভুমিকা কি? কৃষকের সমস্যা দেখার কেউ নেই।

কৃষক জাকির হোসেন বলেন, হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করেও আমরা লাভের মুখ দেখি না। কৃষক আতোয়ার মিয়া বাবু বলেন, আবাদ খরচ যেভাবে বাড়ছে আমাদের আবাদ করাই কষ্টকর হয়ে গেছে। সরকার তো উৎপাদনের সময় আমাদের কোন প্রকার কৃষিঋণ কিংবা ভর্তূকি কিছুই দেয় না।

সমাবেশের সভাপতি আব্দুস সাত্তার বকুল, অবিলম্বে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের দাবি জানান। সমাবেশে উপস্থিত কৃষক-কৃষাণিরা শপথ করেন যে এবছর ধানের ন্যায্য মূল্য না পেলে আগামী বছর থেকে তারা আর ধান আবাদ করবে না।

সমাবেশ শেষে বিক্ষুদ্ধ কৃষক-কৃষাণিরা মহাসড়কে ধান ফেলে প্রতিবাদ জানায়। অবরোধ চলাকালে সকাল ১১ টা থেকে বেলা ১২.৩০ টা পর্যন্ত মহাসড়কের দুধারে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।

পিবিএ/এনএইচএন/আরআই

আরও পড়ুন...