ধামরাইয়ে লেবু চাষে স্বাবলম্বী হাজারো যুবক

পিবিএ,ধামরাই: ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে স্বল্প পুঁজিতে লেবু চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে বেকারত্ব দূর করেছে হাজারো যুবকসহ হতদরিদ্র কৃষক। সরকারি নজরদারী ও বাজারজাতে সহযোগিতা পেলে এর সফলতা বাড়াবে আরও কয়েকগুন জানালেন এ সকল লেবু চাষীরা।

কথিত আছে প্রায় চারদশক আগে উপজেলার পূর্ব বাথুলি গ্রামের একজন স্কুল শিক্ষকের হাত ধরেই এই লেবু চাষের আর্বিভাব ঘটে। বর্তমানে ধামরাইয়ের প্রায় সব ইউনিয়নে চাষাবাদ হলেও উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যানুসারে, এ বছর উপজেলার বালিয়া, যাদবপুর, গাংঙ্গুটিয়া, আমতা, বাইশাকান্দা, সানোড়া, সোমভাগ, কুশুরাসহ মোট ১১টি ইউনিয়নে প্রায় ৬২০ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ হয়েছে। এলাকার অনেক বেকার যুবকসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক ভাবে, স্বল্প পুঁজিতে লাভ জনক ভাবে লেবুচাষ করছেন। একবার লেবুর চারা রোপন করে ৩ থেকে ৪ বছর লেবু পাওযা যায়। বাজারে চাহিদা থাকায় ও ভাল দাম পাওয়ায় দিন দিন লেবুচাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাছে লেবু ধরা শুরু করলে বছরে প্রায় ১২ বার লেবু সংগ্রহ করা যায়।

এ প্রসঙ্গে বাইশাকান্দা ইউনিয়নের আমছিমুর গ্রামের লেবু চাষী নুর হোসেন জানান, তার ব্যক্তিগত ২২০ শতক জমি রয়েছে। এ জমিতে পূর্বে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করতো। ধান চাষে প্রতি বিঘায় খরচ বাদে বছরে ৫ হাজার টাকা মুনাফা থাকতো না। ফলে সে লেবু চাষের দিকে ঝুকে পড়ে প্রথমে নিজের জমিতেই লেবু চাষ শুরু করে। বর্তমানে সে নিজের জমি বাদে অন্যের জমি ১০০০ শতক পত্তন নিয়ে লেবু চাষ করছে। লেবু চাষে উৎপাদন খরচ একেবারেই কম অন্যদিকে বন্যার পানিতেও তেমন নষ্ট হয় না। আবার রোগ বালাইও কম থাকায় তার খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বিঘায় বছরে মুনাফা হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।

অপরদিকে, একই গ্রামের আব্দুল খালেক বলেন, তিনি প্রায় ৭৫০ শতক জমিতে বর্তমানে লেবু চাষ করছে। তিনি লেবু চাষ করে বছরে প্রায় ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা আয় করে থাকে। যদি আমরা সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের সুবিধা পাই তবে আমরা আরো বৃহৎ পরিসরে লেবু চাষ করতে পারব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হাসান বলেন, লেবুতে সাধারণত মাকড়শা আক্রমণ বেশি করে। এছাড়াও লেমন বাটার ফ্লাই, আগামরা রোগ, গ্রীনী রোগ হয়ে থাকে। তবে ধামরাইতে এ ধরনের কোন প্রকার রোগ বালাইয়ের আক্রমন নেই। অন্য ফসলের চেয়ে লাভ বেশি তাই কৃষকরা লেবু চাষে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। ফুড প্রসেসিং কারখানা ও হিমাগার তৈরির মাধ্যমে এই চাষাবাদকে আরও বাণিজ্যিকভাবে প্রসারের জন্য বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহবান জানান তিনি।।

পিবিএ/এমআর/হক

আরও পড়ুন...