ধূমপানের পর চারঘন্টা দূরে থাকুন বাচ্চাদের কাছ থেকে

পিবিএ ডেস্ক: সাত হাজার ক্ষতিকর রাসায়ানিক পাওয়া গেছে সিগারেট-বিড়ির ধোঁয়ায়। এদের মধ্যে ১০০টি অত্যন্ত ক্ষতিকর। ৭০টি কার্সিনোজেনিক, অর্থাৎ ক্যানসার ডেকে আনতে সিদ্ধহস্ত। হবু মায়েদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা থাকলে গর্ভস্থ ভ্রূণ ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক সময় গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান বেরিয়ে আসে। হবু মায়ের সামনে যদি বাড়ির অন্য সদস্যেরা সিগারেট টানেন, তা হলেও বাচ্চার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকী, অন্য ঘরে সিগারেটের ধোঁয়া টানলেও সন্তানসম্ভবার শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি থাকে।

সর্দিকাশি থেকে শুরু করে দাঁতের ক্ষয়, এমনকী হজমের সমস্যা বা ডায়ারিয়া, বাচ্চাদের নানা অসুখবিসুখের অন্যতম কারণ সিগারেট-সহ তামাকের ধোঁয়া। এমনকী, এক বছরের কমবয়সী শিশুদের আচমকা মৃত্যুর অন্যতম কারণ হতে পারে বাবা অথবা বাড়ির বড়দের ধূমপান। বিশ্ব তামাক বিরোধী দিবসের আগে ভারতের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ পল্লব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বললেন সুমা বন্দ্যোপাধ্যায় । সিগারেট না টানলেও ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে। এ যেনো অন্যের দোষের দায়ে আরেকজনকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে দেয়া।
শ্বাসনালী ও ফুসফুসের কষ্ট : লক্ষ্য করে দেখবেন, বাচ্চারা খুব দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়। তাই সিগারেট-বিড়ির ধোঁয়া চট করে ওরা টেনে নেয়। শিশুদের শ্বাসনালী আকারেও অনেকটা ছোট। তাই নিজেদের অজান্তে বুক ভরে টেনে নেয় বিষ ধোঁয়া। যার ফলে বারে বারে শ্বাসনালী ও ফুসফুসের প্রদাহ হয়ে ক্রনিক সর্দিকাশি, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যে সব শিশুর অ্যাজমা আছে, তামাকের ধোঁয়ায় তাদের অ্যাটাক হয়। অনেক সময় ইনহেলার বা ওষুধে কোনও কাজ হয় না।

আচমকা মারা যাওয়ার ঝুঁকি : মা, বাবা অথবা বাড়ির অন্য সদস্যদের ধূমপানের কুপ্রভাবে কমবয়সী বাচ্চাদের আচমকা মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শুরুতে মা ধূমপান করলে অথবা পরোক্ষ ভাবে সিগারেটের ধোঁয়ার মধ্যে থাকলে শিশুদের মধ্যে আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।

নাক-কান-দাঁতের অসুখ থেকে ক্যানসার : সিগারেটের বিষ ধোঁয়া শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে বিকল করে দিতে পারে। নাক-কান-গলায় সংক্রমণ, কানের ইউস্টেশিয়ান টিউবে বাধা, অটাইটিস মিডিয়া, মধ্য কর্ণের সংক্রমণ থেকে ক্রমশ বধির হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। কথা বলার সমস্যা হয়, মানসিক বিকাশও ব্যাহত হতে পারে। এ ছাড়া দাঁতের ক্ষয়, গন্ধের অনুভূতি নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে লিউকোমিয়া সমেত নানা রক্তের অসুখ ও ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়ে।

মনে রাখবেন, ধূমপানের পর জামাকাপড়ে ও ধূমপায়ীর শরীরে বিষাক্ত রাসায়ানিক থেকে যায় কমপক্ষে ঘণ্টা চারেক। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে সিগারেট থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।

পিবিএ/বাখ

আরও পড়ুন...