ধোনির দিকে তাকিয়ে চেন্নাই, টিম গেমে ফেভারিট মুম্বাই

পিবিএ/স্পোর্টস ডেস্কঃ দশ আইপিএলের মেগা ফাইনালে আজ, রবিবার হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নাই সুপার কিংস। দুই দলই তিনবার করে আইপিএল জিতেছে। এবার একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার পালা। মহেন্দ্র সিং ধোনির ক্ষুরধার নেতৃত্ব চেন্নাই সুপার কিংসকে এগিয়ে রাখছে ঠিকই, তবে দলগত সংহতি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের সবচেয়ে বড় শক্তি। যার জোরে রহিত শর্মারা শেষ হাসি হাসতে পারেন!

অষ্টমবার ফাইনালে উঠে সিএসকে যেমন রেকর্ড গড়েছে, তেমনি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স চারবার ফাইনালে উঠে তিনবার জিতেছে। ২০১৩ কিংবা ২০১৫ সালে চেন্নাই সুপার কিংসকে হারিয়েই কিন্তু খেতাব জিতেছিল মুম্বাই। তাছাড়া এবারের আইপিএলে তিনবারের সাক্ষাতেই চেন্নাইকে পরাস্ত করেছে মুম্বাই। সব কিছু বিচার করলে দেখা যাবে, রহিত শর্মারা এগিয়ে থেকেই শুরু করবেন। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে দিল্লি ক্যাপিটালসকে দুরমুশ করায় চেন্নাইয়ের ক্রিকেটারদের মনোবলও তুঙ্গে। তাই ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দ্বাদশ পর্বের আইপিএল ফাইনাল রোমাঞ্চকর হতে পারে। তবে আইপিএল আর চেন্নাই সুপার কিংস নাম দু’টো যেন সমার্থক। দশবারের মধ্যে আটবার ফাইনাল খেলার নজির একমাত্র ধোনিদের রয়েছে। দু’বছরের নির্বাসন কাটিয়ে গতবার খেতাব জিতেছিল সিএসকে। ফের ট্রফি জয়ের হাতছানি সিএসকে’র সামনে। এক ঝাঁক ত্রিশোর্দ্ধ ক্রিকেটারকে নিয়ে এমন ঈর্ষণীয় সাফল্যের ইতিহাস লেখা মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। সেটা সম্ভব হয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো নেতা থাকায়। দুরন্ত উইকেট কিপিং, ধুন্ধুমার ব্যাটিং আর ক্যাপ্টেন হিসাবে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণে ধোনি যে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন, তা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে আইপিএলের ইতিহাসে।

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটিং খুবই শক্তিশালী। ওপেন করতে পারেন ক্যাপ্টেন রহিত শর্মা ও কুইন্টন ডি’কক। বিশ্বকাপের আগে রহিত নিজের সেরা পারফরম্যান্সটা মেলে ধরতে চাইবেন। তিন নম্বরে ব্যাট করবেন সূর্যকুমার যাদব। প্রথম কোয়ালিফায়ারে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ৭১ রানে অপরাজিত থেকে তিনি দলকে জিতিয়েছিলেন। ভালো ব্যাট করছেন ঈশান কিষাণ। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মিডল অর্ডার খুবই শক্তিশালী। হার্দিক পান্ডিয়া, ক্রুনাল পান্ডিয়া, কিয়েরন পোলার্ড ম্যাচ উইনার। বড় রান তাড়া করে ম্যাচ জেতানো হোক কিংবা প্রতিপক্ষের সামনে রানের পাহাড় খাড়া করার ক্ষেত্রে এই তিন জনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। শুধু ব্যাটিংয়ে নয়, বোলিংয়েও হার্দিক, ক্রুনাল ও পোলার্ডের উপর গুরুদায়িত্ব থাকবে। বিশেষ করে হার্দিক পেস অলরাউন্ডার হিসাবে দ্বাদশ আইপিএলে সেরা পারফরম্যান্সটা মেলে ধরেছেন। কুনাল স্পিন অলরাউন্ডার হিসাবে সফল। সেদিক থেকে দেখলে পোলার্ড বল হাতে ততটা সফল নন। তবে চতুর্থ পেসারের ভূমিকা পালন করতে পারেন তিনি। মুম্বাইয়ের দুই তারকা পেসার যশপ্রীত বুমরাহ ও লাসিথ মালিঙ্গা দারুণ ছন্দে আছেন। দুই স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসাবে খেলতে পারেন জয়ন্ত যাদব ও রাহুল চাহার। তবে রহিত শর্মার হাতে অনেক অপশন আছে। পিচ দেখে তিনি দলে কিছু পরিবর্তনও করতে পারেন।

চেন্নাই সুপার কিংস দ্বাদশ আইপিএলে শুরুটা যেভাবে সাড়া জাগিয়ে করেছিল, সেটা কিন্তু শেষ লগ্নে এসে অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়েছে। তবে অভিজ্ঞতা সিএসকে’র বড় সম্পদ। দলের অধিকাংশ ক্রিকেটারের বয়স ত্রিশের বেশি। কিন্তু পারফরম্যান্সে তার প্রভাব পড়ছে না। প্রচণ্ড গরমেও ফাফ ডু’প্লেসি, শেন ওয়াটসন, ইমরান তাহিরদের মতো বয়স্ক বিদেশিদের পারফরম্যান্স সত্যিই নজরকাড়া। সিএসকে’র সফল ওপেনিং জুটি ফাফ ডু’প্লেসি ও শেন ওয়াটসন ফাইনালেও ইনিংসের গোড়াপত্তন করবেন। তিন নম্বরে সুরেশ রায়না ও চারে অম্বাতি রায়াডুর খেলার সম্ভাবনা বেশি। পাঁচে ব্যাট করতে পারেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে সিএসকে’র মিডল অর্ডারও বেশ মজবুত। রায়না, রায়াডুরা পোড় খাওয়া ক্রিকেটার। ফাইনালের বাধা কীভাবে টপকাতে হবে, সেটা তাঁদের জানা। টি-২০ ফরম্যাটে ধোনির এখনও অসাধারণ ব্যাটসম্যান। অঙ্ক কষে তিনি খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। চার-ছক্কায় দর্শকদের মনোরঞ্জন করার পাশাপাশি দলের বাকি ক্রিকেটারদেরও দারুণ উদ্বুদ্ধ করছেন মাহি। সেই তুলনায় ডোয়েন ব্র্যাভো ফর্মে নেই। চেন্নাই সুপার কিংস ফাইনালেও খেলাতে পারে দীপক চাহার, শার্দুল ঠাকুরের মতো তরুণ পেসারদের। এছাড়া ইমরান তাহির, হরভজন সিং ও রবীন্দ্র জাদেজা স্পিন বিভাগের দায়িত্ব সামলাবেন। হরভজন সিং বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখাচ্ছেন। উইকেট নিচ্ছেন। আর বিপক্ষ দলের ব্যাটিংয়ে ধস নামানোর ক্ষেত্রে ইমরান তাহিরের মতো স্পিনারের জুড়ি মেলা ভার।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...