শরিফুল ইসলাম,নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইলের নড়াগাতী থানার খাশিয়াল গ্রামে অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সন্ত্রাসী তান্ডবে পরিবার গুলোর বসতভিটা বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ভয়ে এসব পরিবারের পুরুষ লোকজন বাড়ী ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছে, মামলা করতে সাহস পাচ্ছে না। গত শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে দুই দফায় এ তান্ডব চালানো হয়।
সরেজমিনে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) খাশিয়াল গ্রামে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে,এলাকায় অধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে গ্রামের হানিফ শেখ ও ওহাব শেখের সাথে সাবেক ইউপি সদস্য জাফর মোল্যা ওরফে জাহু মোল্যার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে আসছে। এরই জের ধরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর প্রতিপক্ষ হানিফ শেখের লোকজন জাফর মোল্য কে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। তিনি বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর প্রতিশোধ নিতে জাফর মোলার সমর্থকরা ২৭ সেপ্টেম্বর হানিফ শেখের ছেলে মিলন শেখকে কুপিয়ে আহত করে। এ ঘটনার জের ধরে গত শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে হানিফ শেখ এবং ওহাব শেখের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আশপাশের কয়েক গ্রামের বিএনপির ৩/৪শো লোকজন নিয়ে জাফর মোল্যা সমর্থিত লোকদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে অন্তত্য ৫০টি বাড়ী ভাংচুর করা হয়েছে। ঘরের টিনের চালা, বেড়া, কুপিয়ে ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে। খাট-পালং, শোকেজ, আলনা, ফ্রিজ, চেয়ার-টেবিল, বাক্স আলমারি ঘরের কোনো জিনিষপত্র অক্ষত নেই। এ সময় পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে পপ্রা ১৪/১৫টি ঘরবাড়ি ও একটি মোটরসাইকেল। লুট করে নেওয়া হয়েছে এসব পরিবারের ঘরে থাকা বিভিন্ন নগদ টাকা,সোনার গহনাসহ বিভিন্ন মালামাল ও আসবাবপত্র। এসব বাড়িতে যেয়ে কোনো পুরুষ মানুষকে পাওয়া যায়নি, বাড়ীতে থাকা রেহেনা বিশ্বাস, জোহরা খানম, বিধবা লাইলি বেগম রওশনারা জানান, প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে পুরুষরা বাড়ী ছেড়ে চলে গেছে। অনেকে মালামাল নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। আমরা ভয়ে মামলা করতে সাহস পাচ্ছি না। ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারের মহিলা ও শিশুদের চোখে মুখে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নাম প্রকাষে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যাক্তি জানান খাশিয়াল গ্রামের এই নৃশংস ঘটনায় সরাসরি মাঠে নেতৃত্ব দেন নড়াগাটি থানার বিএনপির সভাপতি মতি খাঁ, ও তার ছোট ভাই আবুল খাঁ। এছাড়া নড়াইল জেলা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস ও তার বংশের আরও অনেকে ঘটনাটি ঘটানো হবে তা আগে থেকেই জানতেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এব্যাপারে নড়াগাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাাফিজুর রহমান বলেন,হামলার সময় সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ ৪জনকে আটক করে থানা হেফাজতে দেয়। তারা চলে যাওয়ার পরে আগুন আর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে, ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় আরো দুইজন কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।