পিবিএ,কলাপাড়া (পটুয়াখালী): নতুন বই হাতে পেয়ে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার। বিদ্যালয়ে এসেছে খালি হাতে,নতুন বই নিয়ে বাড়ি ফিরেছে শিশুরা। বুকে আগলে রাখছে বই। আর তারা নতুন বইয়ে ঘ্রাণ শুকছে। মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বই উৎসব না হলেও বছরের প্রথমদিন উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ওইসব শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন বই বিতরণ করা হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৭১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোমল মতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বই তিবরণ করা হয়। এছাড়া ৬৪ টি এবতেদায়ী মাদ্রাসা, ২৮টি দাখিল মাদ্রাসা, ৩৫ টি মাধ্যমিক ও ৯টি কারিগরি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাহিদার ৯০ শতাশং বই বিতরণ করা হয়েছে। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর এবং মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই দিতে পারেনি বলে জানা গেছে।
শনিবার (১ জানুয়ারি) টিয়াখালী ইউনিয়নের অঞ্জুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের তালা খোলার আগেই বিদ্যালয় মাঠে এসে ভীড় করছে বিভিন্ন শ্রেনীর শিশু শিক্ষার্থীরা। ক্লাসে ঢুকে তারা বই হাতে পেয়ে পাতা উল্টে গল্প,কবিতা একে অপরকে দেখাচ্ছে। আবার নতুন বই হাতে নিয়ে বিদ্যালয় মাঠে খুশিতে ছুটাছুটি করছে। প্রথম দিনে বই সংগ্রহ করতে না পারা অনেক শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে বই নিতে আসতে দেখা গেছে। তৃতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী সুরাইয়া সাথে কথা হলে সে জানান, নতুন বই হাতে পেয়েছি। দ্বিতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী সায়েম বলে, বই যাতে ছিড়ে না যায় সে জন্য বাড়ি গিয়ে ক্যালেন্ডারের পাতা দিয়ে মলাট দেব। এদিকে ইমা শরিফসহ বেশকয়েক জন শিক্ষার্থী নতুন বই পেয়ে বিদ্যালয়ে মাঠে আনন্দ উল্লাস করছিল। এসময় তারা বলে,স্যাররা প্রতিদিন নতুন বই বেশী বেশী পড়তে বলেছেন। উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আনিকা আক্তার রুমা জানান, নুতন স্কুলে ভর্তি হয়েছি। নুতন বই নিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে হবে। বন্ধুদের সাথে অনেক আনন্দ করতে পারবো। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ডেইজি সুলতান বলেন, তার বিদ্যালয়ে মোট ১১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জন ছাত্র ও ৬০ জন ছাত্রী । তাদের প্রত্যেকের হাতেই বই তুলে দেয়া হয়েছে।
কাঁঠালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো.জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক ১ জানুয়ারি ৪র্থ এবং ৫ম শ্রেণীর বই বিতরণ করা হয়েছে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে। খেপুপাড়া সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আবদুর রহিম জানান,শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের তিনটি ধাপে মোট ১২ দিনে বই দেয়া সম্পন্ন করা হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার জানান,এ উপজেলা ২৪ হাজার ৪’শ ৯২ জন শিক্ষর্থীদের মাঝে নতুন বই বিতারণ করা হচ্ছে। ওইসব বিদ্যালয়ে নতুন বই পৌছে দেয়া হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.মোকলেছুর রহমান বলেন,উপজেলার ৩৫টি মাধ্যমিক,৯টি কারিগরি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ১৪ হাজার ৮’শ ৪৬ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে চাহিদার ৯০ শতাংশ বই বিতরণ করা হয়েছে। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর এবং মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেনীর বই আমাদের হাতে এসে এখনো পৌঁছায়নি। খুব শীঘ্রই এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পিবিএ/উত্তম কুমর হাওলাদার/জেডএইচ