পিবিএ: প্রকাশিত নবম ওয়েজবোর্ডের গেজেট বাতিল করে অবিলম্বে সংশোধিত নতুন গেজেট প্রকাশের দাবী জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র নেতৃবৃন্দ। আর তা না মানলে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দিয়েছে সাংবাদিক সংগঠন দুটি।
প্রকাশিত নবম ওয়েজবোর্ডের গেজেট বাতিল করে অবিলম্বে সংশোধিত গেজেট প্রকাশের দাবি তারা বলেন, সাংবাদিক সমাজ দীর্ঘদিন নবম ওয়েজবোর্ডের মাধ্যমে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। গেজেটের মাধ্যমে নতুন ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করা হলেও আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম প্রকাশিত গেজেটে সাংবাদিকরা বিগত চার দশকেরও বেশী সময় ধরে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে তার কয়েকটি কেড়ে নেয়া হয়েছে। যেখানে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করার জোরালো দাবি উচ্চারিত হচ্ছে সেখানে সুবিধা কেড়ে নেয়ার মত নিকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করা হয়েছে নবম ওয়েজবোর্ডের গেজেটে। নেতৃবৃন্দ সংশোধিত নতুন গেজেট প্রকাশের দাবিতে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন -ডিইউজে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজে মহাসচিব এম. আবদুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজে সহ-সভাপতি নূরুল আমিন রোকন, প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মাসুদা সুলতানা, বাসসের ইউনিট চীফ আবুল কালাম মানিক, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য সৈয়দ আলী আসফার, ডিএম আমিরুল ইসলাম অমর, এস এম আলামিন প্রমুখ। এছাড়া সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- ডিইউজের সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ ওবাইদুর রহমান শাহীন, ডিইউজের দফতর সম্পাদক শাজাহান সাজু, সাংবাদিক ইউনিয়ন- দিনাজপুরের সাধারণ সম্পাদক মাহফিজুল ইসলাম রিপন, দফতর সম্পাদক আতিউর রহমান প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন- ডিইউজের জনকল্যাণ সম্পাদক খন্দকার আলমগীর।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ গণমাধ্যম বিরোধী সরকার। নবম ওয়েজবোর্ডের যে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে তা মালিকদের স্বার্থে করা হয়েছে। এই মূর্খ্য সরকার ও মূর্খ কমিটি এই ওয়েজবোর্ড প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে প্রকাশিত নবম ওয়েজবোর্ডের গেজেট প্রত্যাহার করে সব সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ-আলোচনা করে নতুন গেজেট প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, ভোটারবিহীন সরকার তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে আমার দেশ পত্রিকা, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও চ্যানেল ওয়ানসহ অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করেছে। এর ফলে হাজার হাজার সাংবাদিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছে। এ সরকার গণমাধ্যম বিরোধী। এই সরকারের বিদায় ছাড়া স্বাধীন গণমাধ্যম সম্ভব নয়। এসময় তিনি নতুন কর্মসূচী ঘোষনা করেন। দাবি না মানলে নতুন কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেন।
এম আবদুল্লাহ বলেন, বহুল প্রতিক্ষিত নবম ওয়েজবোর্ড চেয়ে পেয়েছি কিন্তু এটি কালো ওয়েজবোর্ড । আওয়ামী লীগ সরকার প্রমাণ করেছে তারা সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের শত্রু। তারা কখনো সাংবাদিকের কল্যাণ চায় না। প্রকাশিত নবম ওয়েজবোর্ডের গেজেটে সাংবাদিকদের সুবিধা কর্তন করা হয়েছে। এই কালো ওয়েজবোর্ড ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি। এই গেজেট সাংবাদিক সমাজ মানে না, মানবে না। এসময় তিনি নতুন ওয়েজবোর্ড গঠনে সরকারকে বাধ্য করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার এখনো অব্যাহত আছে। একের পর এক সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে।
সর্বশেষ দৈনিক জনতা পত্রিকার সম্পাদক আহ্সান উল্লাহ্, প্রকাশক ছৈয়দ আন্ওয়ার ও সিনিয়র রিপোর্টার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তাদেরকে পুলিশি হয়রানি না করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সরকারের যে চরিত্র তাই প্রকাশ করেছে নবম ওয়েজবোর্ড গঠনে। ঠকবাজ সরকার নবম ওয়েজবোর্ডে ঠকবাজি করেছে। এই ওয়েজবোর্ড আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি। সরকার এবং মালিকরা যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই এই ওয়েজবোর্ড করা হয়েছে।
পিবিএ/জেআই