পিবিএ, নরসিংদী: নরসিংদীবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা আন্তঃনগর ট্রেনের নরসিংদীতে যাত্রা বিরতির দাবি পুরণ হলেও ঢাকাগামী যাত্রীদের চরম ভোগান্তি মাথায় নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অতিরিক্ত যাত্রী আর পর্যাপ্ত বগি না থাকার কারণে দিন দিন ভোগান্তি বেড়েই চলছে।
রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিন ভোর থেকেই ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে, সকাল পৌনে ১০ টার মধ্যে প্লাটফর্মে পৌঁছায় ঢাকাগামী মোট পাঁচটি ট্রেন। এর মধ্যে আন্তঃনগর এগারসিন্ধু ট্রেনটিতে সবচেয়ে বেশি যাত্রীদের চাপ দেখা যায়। এতে টিকেট কাউন্টারে তেমন কোন ভিড় না দেখা গেলেও ট্রেনে উঠা যাত্রিদের হুড়োহুড়িটাই বেশি চোঁখে পড়ে। আবার কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে উঠে অফিসে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় রোগী ও বয়স্কদের ট্রেনে উঠতে বেগ পেতে হয়। অনেক সময় দরজার সামনে যাত্রিদের জটলা থাকায় ট্রেনের ভিতরে থাকা পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের বাধ্য হয়ে জানালা দিয়ে নামতে দেখা যায়।
নিয়মিত যাত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা জানান, ট্রেনের মাধ্যমে নরসিংদী থেকে ঢাকার চলাচল সহজ ভেবে তিনি সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরার একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। তিনি জানান সকাল ১০টায় অফিসে পৌঁছার জন্য ভোর বেলা বাসা থেকে রওনা দিতে হয়। অনেক কষ্ট করে আসনবিহীন টিকিটে পুরুষ-মহিলাদের গাদাগাদির মধ্য দিয়ে তাকে অফিসে পৌঁছাতে হয়। এরপর বিকালে নরসিংদী ফেরার পথেও পড়তে হয় একই অবস্থায়। নরসিংদী থেকে এ রেল রুটে অফিসগামীদের জন্য বিশেষ রেল ব্যবস্থা করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এছাড়া ট্রেনের ভিতরে প্রচন্ড ভিড়ে প্রতিদিনই পকেট মারের শিকার হচ্ছে যাত্রীরা,অনেকে অসুস্থ হয়েও পড়ছেন বলে জানান রাহুল নামে এক চাকরিজীবী যাত্রী। ট্রেনে চলার পথে তার ব্যবহৃত ৫৫ হাজার টাকা দামের একটি স্মার্ট ফোন খোয়া গেছে বলে তিনি জানান।
“আমরা নরসিংদীবাসী” সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তৌকির আহমেদ বলেন, ব্যাপক আন্দোলনের পর চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী, সিলেটগামী উপবন ও নোয়াখালী যাওয়ার জন্য আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবি পুরণ হয়। একইভাবে যদি মহানগর প্রভাতী ঢাকা যাওয়ার পথেও যাত্রা বিরতি দেওয়া হতো, তাহলে যাত্রীর চাপ কিছুটা কম হতো।
ভারপ্রাপ্ত স্টেশনমাস্টার আবু তাহের মুছা বলেন, প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০ টার ভিতরে ঢাকাগামী লোকাল আন্তনগর মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার টিকেট বিক্রি হয় এ স্টেশনে। প্রতিটা ট্রেনের দুই মিনিট যাত্রা বিরতি থাকলেও যাত্রিদের সুবিধার্থে ১০ মিনিট থামিয়ে রাখা হয়। তবুও যাত্রিদের চাপ কমানো যাচ্ছে না। নরসিংদী থেকে ঢাকাগামী একটি বিশেষ ট্রেন প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
পিবিএ/কেএস/এফএস