নরেন্দ্র মোদীর জেল হওয়া উচিত : রাহুল গান্ধী

Rahul

পিবিএ ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এবার রাফায়েল চুক্তি ইস্যুতে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’-এর অভিযোগ তুললেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাফায়েল চুক্তিতে অনিল আম্বানীর মধ্যস্থতাকারী বা ‘মিডলম্যান’ হিসেবে কাজ করেছেন। সরকারি গোপনীয়তা আইন ভেঙে আগেভাগেই রাফায়েল চুক্তি হতে চলেছে বলে অনিল আম্বানীকে জানিয়ে দিয়েছেন। রাহুলের যুক্তি, ‘এ তো ফৌজদারি অপরাধ। শুধু এর জন্যই প্রধানমন্ত্রীর জেল হওয়া উচিত।’

নতুন ফাঁস হওয়া একটি ইমেলকে মোদীর বিরুদ্ধে অস্ত্র বানিয়েছেন রাহুল। বিমান সংস্থা এয়ারবাস-এর এক কর্মকর্তার লেখা ওই ইমেল অনুযায়ী, ২০১৫ সালের মার্চে অনিল আম্বানী তৎকালীন ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। আম্বানী তাকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ফ্রান্স সফরে একটি চুক্তি সই করার প্রস্তুতি চলছে।

তথ্য বলছে, এর ঠিক ১০ দিন পরে, ২০১৫ সালের এপ্রিলে মোদীর ফ্রান্স সফরের সময়ই যৌথ বিবৃতিতে ভারত ৩৬টি রাফায়েল যুদ্ধ বিমান কিনবে বলে সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়। তার ঠিক আগেই, মার্চে আম্বানী রিলায়্যান্স ডিফেন্স সংস্থা খোলেন। আম্বানীর সংস্থাই রাফায়েল চুক্তির শর্ত মেনে দাসো-র থেকে বরাত পায়। কংগ্রেসের অভিযোগ অস্বীকার করে আজ রিলায়্যান্স ডিফেন্স জানায়, ইমেলে রিলায়্যান্স ডিফেন্সের সঙ্গে এয়ারবাস হেলিকপ্টারের সমঝোতার কথা বলা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবারেই সংসদে রাফায়েল নিয়ে সিএজি-র রিপোর্ট পেশ করার কথা ছিল। বিজেপি নেতারা ভেবেছিলেন, সেই রিপোর্টকে ঢাল করে রাহুলের আক্রমণের জবাব দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিএজি রিপোর্ট আজ সংসদে পেশ হয়নি। আজ বুধবার ওই রিপোর্ট পেশ হতে পারে।

রাহুলের যুক্তি, এরপরে সিএজি রিপোর্ট এলেও তার কোনও দাম নেই। কারণ সিএজি আসলে ‘চৌকিদার অডিটর জেনারেল’ হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে রাহুলের মন্তব্য, সিএজি রিপোর্ট চৌকিদারই লিখেছেন, চৌকিদারকে বাঁচানোর জন্যই লেখা হয়েছে।

যার দিকে তীর, সেই প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে মুখ না-খুললেও হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘যারা ভ্রষ্ট, মোদীকে নিয়ে তাদেরই কষ্ট। চৌকিদারের প্রতি সৎ মানুষের আস্থা রয়েছে।’ বিরোধীদের মহাজোটকে ফের ‘মহাভেজাল’ বলে মোদীর মন্তব্য, ‘মহাভেজালের মুখরা আদালত, সিবিআইকে হুমকি আর মোদীকে গালিগালাজ করতে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় নেমেছে।’

কিন্তু কংগ্রেস সভাপতির প্রশ্ন, ‘ফ্রান্স সফরে যে রাফায়েল চুক্তি হবে, তা তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের জানা ছিল না। পররাষ্ট্র সচিবও জানতেন না। অথচ অনিল আম্বানী ১০ দিন আগে থেকেই কী করে জানতেন যে বিশ্বের বৃহত্তম প্রতিরক্ষা চুক্তির বরাত তিনি পেতে চলেছেন? এর জবাব প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হবে।’ তার অভিযোগ, ‘‘চরেরা যে কাজ করে, প্রধানমন্ত্রী সেই কাজ করছেন। এটা রাষ্ট্রদ্রোহের থেকে কোনও অংশে কম নয়। উনি গোপনীয়তার শপথ নিয়েছেন। অথচ দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন তথ্য অনিল আম্বানীকে দিয়ে দিচ্ছেন।’ তার যুক্তি, এত দিন রাফায়েল-এ দুর্নীতির প্রশ্ন ছিল, নিয়ম ভাঙার প্রশ্ন ছিল। এখন প্রধানমন্ত্রীর গোপনীয়তার শর্ত ভাঙার প্রশ্ন।

সিএজি রিপোর্ট না আসায়, খালি হাতেই কেন্দ্রের আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ রাহুলকে পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘উনি বিদেশি সংস্থার লবিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।’ একই সুরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি ব্লগ লিখে অভিযোগ তোলেন, কংগ্রেসের রাজপরিবারকে রক্ষা করার জন্য মিথ্যের জাল বোনা হচ্ছে। কংগ্রেসের নেতারা এতটাই পরিবারের দাসানুদাস যে, তারা সত্যিটাও বলেন না।

পিবিএ/জিজি

আরও পড়ুন...