পিবিএ ডেস্ক: ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে অনশনে বসছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিএম নেতা পিনারাই বিজয়ন। কেরালা সিপিএম সূত্রে খবর, আগামীকাল সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি দলীয় নেতা ও বেশকিছু ‘অ-বিজেপি’ জাতীয় দলের নেতা তিরুবনন্তপুরমের পালায়মের শহিদ মিনারে অনশনে বসবেন।
কেরালা সিপিএম বলছে, নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করতে গিয়ে কোনো ধংসাত্মক ও প্ররোচনামূলক কাজ করা যাবে না। অনশনই একমাত্র বিজেপিকে আটকানোর পথ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাসহ ভারতের ছয় রাজ্যের মুখমন্ত্রী সদ্যপ্রণীত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন তাদের রাজ্যে প্রয়োগ করতে দেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
পিনারাইয়ের ওই অনশন কর্মসূচি কতটা কার্যকর হয় তা দেখেই বিভিন্ন রাজ্যে প্রয়োজনে অনশনে নামবে সিপিএম। কেরালা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, পঞ্জাব, ছত্তিসগড় ও মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা বিজেপি সরকারের বিতর্কিত এই নাগরিকত্ব প্রদান সংক্রান্ত আইন কোনোভাবে তাদের রাজ্যে প্রয়োগ করতে দেবেন না বলে হুমকি দিয়েছেন।
ভারতের সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পরপররই কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ঘোষণা দেন, তার রাজ্যে ওই আইন কার্যকর করতে দেয়া হবে না। বামপন্থী ওই নেতার অভিযোগ, এই আইন বিজেপির শরিক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএ) পরিবারের এজেন্ডা মেনে ‘হিন্দুরাষ্ট্র’ তৈরির ষড়যন্ত্র।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় সংবিধানের সাম্য ও ধর্মনিরপেক্ষতার বৈশিষ্ট্যকে গলাটিপে হত্যা করছে। কেরালা ঐক্যবদ্ধভাবে ওই আইনের বিরোধিতা করবে।’
তবে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের অনশন কর্মসূচিতে শুধু রাজনৈতিক নেতা-কর্মী নয়, সংস্কৃতি ও সাহিত্য জগতের মতো একাধিক ক্ষেত্রের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বরাও উপস্থিত থাকবেন বলে দলটির পক্ষে জানানো হয়েছে। কেরালার বিরোধী দলীয় নেতা রমেশ চেনিথালা আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছে।
রমেশ চেনিথালা বলেন, ‘রাজ্যের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে অনশনেও বসবো। আমরা বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করবো। তারা আরএসএস-এর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই তাদের উদ্দেশ্য সফল হতে দেব না।
প্রসঙ্গত, ভারতের ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে সংশোধন করে নুতন আইন তৈরি করা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, আসামসহ উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে বিক্ষোভ চলছে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিক্ষোভে আসামে ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নতুন এই আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ ২০১৫ সালের আগে প্রতিবেশী পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ‘ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার’ হয়ে যেসব অমুসলিম (হিন্দু, শিখ, খ্রিষ্টান, জৈন, পারসি ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা) ভারতে গেছেন তাদেরকে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে।
পিবিএ/এমএসএম