নাগরিকত্ব বিল ইস্যুতে বিক্ষোভে অচল আসাম

পিবিএ ডেস্ক : বিরোধীদের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও ভারতের লোকসভায় পাশ হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। আগামীকাল বিলটি তোলা হবে রাজ্যসভায়। এদিকে, এই বিলকে ঘিরে আসামসহ উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যে আজ হরতাল, বিক্ষোভ চলছে। তবে এই বিলকে ঘিরে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে আসাম। ত্রিপুরায় বিল বিরোধীরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে পুলিশ ও দোকানপাটে পেট্রল বোমা, অ্যাসিড ছোড়ে। তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালিয়েছে। গুলিতে চার বিক্ষোভকারী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

নাগরিকত্ব বিল নিয়ে গতকাল জেপিসি তাদের চূড়ান্ত রিপোর্ট লোকসভায় পেশ করে। তার ভিত্তিতে ‘সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৯’ লোকসভায় পেশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে অত্যাচারিত হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, পার্সিদের যাওয়ার জায়গা একমাত্র ভারত। সেই কারণেই এই সংশোধনী আনা হচ্ছে।’ ‘ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব’ ভারতীয় সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিপন্থী-বিরোধীদের এই অভিযোগ উড়িয়ে নেহরু থেকে মনমোহনের বহু মন্তব্য, দেশভাগের ইতিহাসকে টেনে আনেন রাজনাথ। তার বক্তব্য, ‘ওই তিন দেশের অত্যাচারিত সংখ্যালঘু উদ্বাস্তুদের দায় গোটা দেশকেই নিতে হবে। আসামকে এককভাবে এই বোঝা বইতে হবে না।’

নাগরিকত্ব বিলকে ঘিরে আসামের তীব্র অসন্তোষকে প্রশমিত করতে আসামের ছয়টি জাতিকে তফসিলভুক্ত করার জন্য একটি বিল সংসদে পেশ করা হচ্ছে বলেও জানান রাজনাথ। তাই-অহোমিয়া, কোচ-রাজবংশী, সুতীয়া, চা-জনজাতি, মরাণ ও মটক-এই ছয়টি জনজাতিকে তফসিলভুক্ত করার দাবি আসামে দীর্ঘ দিন ধরেই রয়েছে। রাজনাথ জানান, কেন্দ্রীয় সরকার বিলটিতে অনুমোদন দিয়েছে। এরই পাশাপাশি, বড়ো-কাছারিদের আসামের পার্বত্য জেলাগুলিতে এবং কার্বিদের সমতলে তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার জন্য আরও একটি বিল আনা হবে।

এদিকে, আসামে আসু-সহ বিভিন্ন সংগঠনের ডাকা এবং কংগ্রেস, অগপ, এআইইউডিএফ সমর্থিত হরতালে গুয়াহাটিসহ আসামের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা আজ কার্যত অচল হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। কেন্দ্রের শ্রমিক-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে এদিনই ছিল শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা হরতাল। দুইয়ে মিলে আসাম ছাড়াও মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মেঘালয়, অরুণাচলের অধিকাংশ এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীরা গত রাত থেকেই গুয়াহাটি বিমানবন্দরে এসে অপেক্ষা করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় রেল ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। ডিব্রুগড়ে সিআরপিএফের গাড়িতে আক্রমণ চালায় তারা। সব দোকানপাট, স্কুল, বেসরকারি দফতর, পেট্রল পাম্প বন্ধ রয়েছে।

পিবিএ/জিজি

আরও পড়ুন...