পিবিএ ডেস্ক: চলে গেলেন নাট্য ব্যক্তিত্ব গিরীশ কারনাড। ৮১ বছর বয়সে বেঙ্গালুরুতে মারা যান তিনি। নাটক ছাড়াও সিনেমা ও সাহিত্য জগতেও ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ।
সোমবার বেঙ্গালুরুতে নিজের বাসভবনে মারা যান গিরীশ কারনাড। বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয় তাঁর। মারাঠি নাটকে তিনি ছিলেন অন্যতম কান্ডারি। এছাড়া একাধিক সিনেমাও পরিচালনা করেছিলেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে অনেক কন্নড় ও মারাঠি ছবি। তবে বেশিরভাগ ছবিতেই চিত্রনাট্য লেখার দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। সেরা পরিচালক হিসেবে ১৯৭১ সালে কন্নড় ছবি ‘ভামসা ভ্রিক্ষা’-র জন্য তিনি পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। এছাড়া আরও ন’টি জাতীয় পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। এর মধ্যে কোনওটা চিত্রনাট্যকার হিসেবে, কোনওটা আবার পরিচালক হিসেবে। চিত্রনাট্য ও পরিচালনার পাশাপাশি সিনেমায় অভিনয়ও করেছিলেন তিনি। হিন্দি ছবি ‘ডোর’, ‘ইকবাল’, ‘এক থা টাইগার’ ও ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-তেও অভিনয় করেন।
সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশের সঙ্গে হৃদ্যতা ছিল কারনাডের। লঙ্কেশের খুনের পর অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের নিরাপত্তাই বাড়ানো হয়েছিল পুলিশের তরফে। তার মধ্যে কারনাডও ছিলেন। ধর্ম ও জাতপাতের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার ছিলন কারনাড। বারবার তাঁর নাটকে উঠে এসেছে সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা। বাবরি মসজিদ ধ্বসের পর তিনি মুখ খুলছিলেন। তাঁর নাটকের মূল বিষয় হিসেবে বরাবরই উঠে এসেছে সামাজিক সমস্যা, ক্ষয় ও রাজনৈতিক বিষয়ের নেতিবাচক দিকগুলি। বলা হয়, মারাঠি নাটক তাঁর হাত ধরেই যৌবনে পদার্পণ করেছে। কারনাডের দেখানো পথেই আজ এতটা জনপ্রিয়তায় পৌঁছেছে মারাঠি নাটক ৷ তাকে সম্বৃদ্ধ করে তোলার পিছনে কারনাডই ছিলেন অন্যতম কান্ডারি।
নাটকের জগতে তাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি থাকলেও সাহিত্য জগতে কারনাডের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পুরস্কার ‘জ্ঞানপীঠ’ প্রাপ্ত কারনাড। এছাড়া কালিদাস সম্মান, কন্নড় সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি থেকেও পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। লস অ্যাঞ্জেলসের ইউনিভার্সিটি অফ সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া থেকেও তিনি সম্মানিত হয়েছিলেন। পদ্মশ্রী ও পদ্মবিভূষণ সম্মানেও ভূষিত হন কারনাড। কারনাডের রাজনৈতিক আদর্শও ছিল খুব স্পষ্ট ৷ উদারমনস্ক, ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি তাঁর বরাবরের সমর্থন ছিল ৷ এমন এক ব্যক্তিত্বের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ শিল্পমহল ৷
পিবিএ/এমএসএম