নিরাপদ সড়ক চাওয়া শিক্ষার্থীর প্রাণ গেল সড়কেই

ফাইল ছবি

পিবিএ, ঢাকা: রাজধানীর নর্দা-বসুন্ধরা এলাকায় বেপরোয়া বাসের চাপায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী নিরাপদ সড়কের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন।নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে সমর্থন ছিল তার।সেই সমর্থনের কথা জানা যায় আবরারের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে।অথচ তার প্রাণ গেল সড়কেই।

আবরারের ফেসবুক প্রোফাইলে ঢুকে , রাজধানীতে নিরাপদ সড়ক দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলন চলাকালে আববার সেই আন্দোলনে সমর্থন দেন। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক ওই আন্দোলনে প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করে তিনি ফেসবুকে প্রোফাইলে ছবি দেন। ছবির নিচে লেখা ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ স্টিকার দেয়া। গত বছরের ২ আগস্ট ছবিটি পোস্ট করেন আবরার।ওই সময় নিরাপদ সড়ক দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলনে উত্তাল ছিল সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

গত বছরের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনের সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুলের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন।এর প্রতিবাদে গত বছরের ২৯ জুলাই থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর পাশাপাশির সারাদেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে।২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত চলে ওই আন্দোলন।

সেই আন্দোলনে সমর্থন ছিল আজকের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আববারের। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালে (বিইউপি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিইউপির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তার বাবা আরিফ আহমেদ চৌধুরী।

পুলিশ জানায়, শিক্ষার্থীদের বহনকারী বিইউপির একটি বাস সকালে বসুন্ধরা এলাকায় সড়কে দাঁড়িয়েছিল। সকাল সোয়া ৭টার দিকে আবরার বাসে উঠতে যাচ্ছিলেন। এ সময় পাশে থাকা গাজীপুরগামী সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একই পরিবহনের অপর একটি বাসকে ওভারটেক করার জন্য বেপরোয়া গতিতে সুপ্রভাত পরিবহনের বাসটি চালাচ্ছিলেন চালক। দুর্ঘটনার পর নিহত ছাত্রের সহপাঠীরা বাসটি আটক করেন। এ সময় চালক ও হেলপার পালানোর চেষ্টা করেন। পরে চালক সিরাজুল ইসলামকে ধরে ফেলেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা এ সময় সুপ্রভাত পরিবহনের সব বাস আটক করে রাস্তা বন্ধ করে মিছিল করতে থাকেন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন অফিসগামী লোকজনসহ সব বাসযাত্রী। এ সময় তাদের পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করতে দেখা যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ছাত্রদের শান্ত করার চেষ্টা করে। ঘটনাস্থলে আসা গুলশান থানার এসআই মোশাররফ হোসেন জানান, ঘাতক বাসটি আটক করে থানায় পাঠানো হয়েছে। চালককেও আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

রাজধানীতে ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা সপ্তাহ’ চলার মধ্যেই এ দুর্ঘটনা ঘটল। সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানীতে গত ১৭ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে পঞ্চমবারের মতো ট্রাফিক সপ্তাহ।

পিবিএ/এমএস

আরও পড়ুন...