নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যেভাবে চাঁদপুরে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ

পিবিএ, চাঁদপুর: দেশে ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে জাটকা রক্ষায় সরকার মার্চ-এপ্রিল দুই মাস পদ্মা-মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মওজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু বাংলা নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ) উদযাপন করার জন্য এক শ্রেণির অসাধু বিক্রেতা গোপনে ইলিশ বিক্রি করছেন। তবে দাম সাধারণ সময়ের চাইতে দ্বিগুন। চাঁদপুর শহর কিংবা জেলার অন্য কোন বাজারে প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে না। চাহিদা থাকলেও আইনি ভয়ে ক্রেতারাও নিরব। কারণ প্রতিনিয়ত বাজারগুলো মনিটরিং করছেন জেলা ট্রাস্কফোর্স।

সোমবার (১০ এপ্রিল) সকালে জেলার সব চাইতে বড় মৎস্য আড়ৎ বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখাগেছে সবগুলো আড়ৎই নিরব। ইলিশের আমদানি না থাকলে আড়ৎগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার ভীড় থাকে না। শুধুমাত্র দুপুর বেলায় শরীয়তপুর জেলা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন জলাশয়ের চাষকৃত রুই, কাতল, তেলাপিয়া ও চিংড়ি মাছ আড়তে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসেন লোকজন। ১ থেকে দেড় ঘন্টার মধ্যেই এসব মাছ বিক্রি হয়ে যায়। এরপর থেকে আড়তের কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

মৎস্য ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞার পূর্বে চাঁদপুরের নদীর ইলিশ সংরক্ষণ আছে। ওইসব ইলিশের মধ্যে ৫শ’ গ্রাম ইলিশ প্রতি কেজি ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা, ৮শ’ গ্রাম ১২’শ থেকে ৫০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার টাকা ও ১ কেজি ৭শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৩ হাজার টাকা। তবে কেউ কেউ বার্মা থেকে আমদানিকৃত ইলিশ আরো কম দামে বিক্রি করে।

কচুয়া উপজেলা থেকে ইলিশ ক্রয় করতে আসা ক্রেতা মো. মানিক জানান, মৎস্য আড়তে গিয়ে ইলিশ চাওয়া হলে ওজন জেনে এনে দেয়া হয়। আমি ৫শ’ গ্রাম ওজনের ২ কেজি ১ হাজার ৫শ’ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি।

মৎস্য ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন বলেন, মৎস্য ব্যবসায়ীরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা মান্য করে। নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে গত কয়েকবছরই চাঁদপুরের ইলিশ ম্যানু থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এ কারণে স্থানীয় প্রশাসনসহ কোন সংগঠনেই ইলিশের চাহিদা নেই। কেউ গোপনে বিক্রি করে কিনা তা আমার জানা নেই।

চাঁদপুর মৎস্য বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি আব্দুল খালেক মাল বলেন, চাঁদপুর মৎস্য আড়তে কোন তাজা ইলিশ বিক্রি হয় না। কেউ যদি অর্ডার দেয়, তাহলে কোল্ড স্টোরেজ থেকে এনে পূর্বে সংরক্ষিত ইলিশ সরবরাহ করা হয়।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি বলেন, চাঁদপুর মাছঘাটে গত কয়েকদিন আগে অভিযান চালানো হয়েছে। একটি আড়তে কিছু জাটকা পাওয়াগেছে। আর কোনটিতে ইলিশ পাওয়া যায়নি। কেউ গোপনে বিক্রি করে কিনা, তা আমার জানা নেই। তবে যদি অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আমরা কোস্টগার্ডকে সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করবো।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, চাঁদপুরে জাটকা সংরক্ষণের জন্য মার্চ-এপ্রিল দুই মাস অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে ইলিশ বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ইলিশ বিক্রয়ের কোন সংবাদ পেলে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। চাঁদপুরে পহেলা বৈশাখ উদযাপন কিংবা কোন অনুষ্ঠানে এই দুই মাস ইলিশ খাওয়ানো বাদ দেয়া হয়েছে।

পিবিএ/হক

আরও পড়ুন...