নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চিলমারীর ব্রহ্মপুত্রে অষ্টমী স্নান!

প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, রাজারহাট(কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কয়েক হাজার হিন্দু ধর্মালম্বী অষ্টমীর স্নানে অংশ নেয়।
১ এপ্রিল বধুবার এ পূণ্য তিথি আসায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে এই পুণ্যস্নানে বেশি আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। ফলে সরকারি বাঁধা উপেক্ষা করে,
ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন তীরে জামায়েত হয়ে স্নানে অংশ নেয়। এ উপলক্ষে বসেছে মেলাও।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানাযায়, মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের সনাতন ধর্মবলম্বী পূন্যার্থীরা ব্রহ্মপুত্র পারে সমবেত হয় এবং স্নানে অংশ
নেয়। তবে গত রাতে ও সকালে চিলমারী থানা পুলিশ তীর্থ স্থানে সমবেত না হওয়ার জন্য মাইকের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ঘাটের বিভিন্ন
জায়গায় পূর্ণার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা চালায়। এদিকে এধরনের জমায়েত এর ঘটনায় সংক্রমনের ভয়ে, উদ্বিগ হয় এলাকার মানুষজন।
জানা গেছে, ১৯৪৫ সাল থেকে প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুল্ক পক্ষের অষ্টমী দিনে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী অষ্টমী
স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর এই দিনে নেপাল,ভুটান ও ভারতসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৩/৪লক্ষ পূন্যার্থীর সমাগম ঘটে চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র তীরে। সে মোতাবেক ১ এপ্রিল বুধবার অষ্টমী স্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশ ব্যাপী সকল প্রকার গণজমাতের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই এবার ব্রহ্মপুত্র তীরে অনুষ্ঠিতব্য অষ্টমীর স্নানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে ও প্রশাসনের নজর এডিয়ে বিছিন্ন ভাবে ব্রহ্মপুত্র তীরে হাজারো পূন্যার্থী জমায়েত হয় এবং স্নান উৎসবে যোগদেয়। এবারে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে অন্য কোন দেশের পুণ্যার্থী কে দেখা যায়নি। তবে অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে এবারের অষ্টমী স্নান ছিল খুবই সীমিত।

জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি থেকে আসা কানাই সরকার নৌকা নিয়ে সপরিবারে এসছেন চিলমারীতে স্নানে। জলধর বর্মণ এসেছেন রাজারহাটের পাঠক পাড়া থেকে। তিনি জানান, এবার বুধবার অষ্টমীর স্নান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অনেক বছর পর পর বুধবার অষ্টমী তিনি আসেন। তাই আমরা এটাকে বুধা অষ্টমী বলে থাকি। এই তিথিতে স্নান বড় পুণ্যের। তাই পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে এসেছি স্নানে। জীবন দেয়ার মালিক ঈশ্বর। নেয়ারও মালিক ঈশ্বর।

বাংলাদেশ পূঁজা উদযাপন কমিটি চিলমারী শাখার সভাপতি ডাঃ সলিল কুমার সরকার জানান,পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এবারের অষ্টমী স্নানে ৫ লক্ষাধীক
পূন্যার্থীর সমাগম ঘটতো। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে গণজমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় অষ্টমী স্নান ওইভাবে অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পূন্যার্থী স্নান করেছে।
চিলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, ব্রহ্মপুত্র তীরের প্রায় ৫কিঃ মিঃ এলাকাজুড়ে আমাদের টহল অব্যাহত ছিল এর মধ্যে যারা এসেছিল তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ বলেন, অষ্টমী স্নানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে গণবিজ্ঞপ্তি মাইকিং ও বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র তীরে যাতে মানুষ জমায়েত না হয় সে ব্যাপারে চিলমারী থানার অফিসার ইনচার্জকে নজরদারী রাখতে বলা হয়েছে।

পিবিএ/প্রহলাদ মন্ডল সৈকত/মোআ

আরও পড়ুন...