নাজমুল হুসাইন,ইবি: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নির্মাণসামগ্রী গায়ে পড়ে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় ৮ দফা দাবি ও সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারীও দেন তারা।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গগন হরকরা গ্যালারীতে নিহত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ ও কর্মস্থলে তাদের নিরাপত্তার দাবিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়।
এসময় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ৮ দফা দাবি উল্লেখ করে বলেন, শ্রমিকের মৃত্যুতে সংযুক্ত ঠিকাদার কোম্পানি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ হতে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। বহুতল অর্থাৎ দ্বিতীয় তলার পর থেকে উপরে জাল/ টিনের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে। ক্যাম্পাস অভ্যন্তরে নির্মান সামগ্রির গাড়ির গতিসীমার নিয়ন্ত্রন এবং গাড়ি দিনের বেলা প্রবেশ না করানো, প্রতিদিন রাতের বেলা ও বন্ধের দিনগুলোতে দিন ও রাতের বেলা গাড়ি প্রবেশের শিডিউল নিশ্চিত করা। উন্নয়নমূলক কাজ রাতের বেলা অথবা শিফট অনুযায়ী ভাগ করে করতে হবে। রাস্তার উপরে রড কাটাকাটি এবং বালু, সিমেন্ট রেখে কাজ করা যাবে না। প্রকল্পের বিল্ডিং এর চারপাশ আটকে দিতে হবে। শ্রমিকদের হেলমেট, পায়ে গামবুট, মুখে মাস্ক ও উপরে কাজ করার ক্ষেত্রে লিফট, সেফটি বেল্ট, শক্ত দড়ি-মাচা ব্যবহার করতে হবে। নির্মাণ সামগ্রী প্রবেশের দরুণ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাস্তার ধূলাবালী নিয়ন্ত্রনে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে এবং শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ রাখতে হবে।
জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয় টায় নির্মাণাধীন ভবনে ওবায়দুর রহমান(৪০) নামে এক শ্রমিক পাইলিং করার সময়ে নিহত হন। তিনি পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার রূপপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের পুত্র।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম, সহকারী প্রক্টর শরিফুল ইসলাম জুয়েল, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী সহিদ উদ্দীন মো. তারেক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড.নওয়াব আলীসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারীরা।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী সহিদ উদ্দীন মো. তারেক বলেন, প্রতিটি দাবি যৌক্তিক। আমরা ঠিকাদারদের সাথে অতিদ্রুত যোগাযোগ করে নিহতের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
তিনি আরও বলেন, বাকি দাবি গুলো খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মনিরুল ইসলাম (২৬) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।