নীলফামারীতে মদ ক্রয়ের কার্ড ভাটি মালিকের দখলে

mod-pba

পিবিএ,নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের মদভাটিতে মদ ক্রয়ের জন্য দেয়া মুচিদের ভোক্তা কার্ড নিজের দখলে রেখে অকার্ডধারীদের মধ্যে বাংলা মদ বিক্রি করছে ভাটি মালিক। এর ফলে মদ ক্রয়ের কার্ডধারী মুচিরা প্রয়োজনে তাদের মদ পাচ্ছেনা বলেও অভিযোগ উঠেছে।

তাছাড়া কার্ডধারীদের অতিরিক্ত ব্যক্তির মধ্যে মদ বিক্রি করে অধিক মুনাফা লাভের সুযোগ নিতে এক ড্রাম মদকে পানি দিয়ে ২ ড্রামে পরিনত করা হচ্ছে মর্মে অভিযোগ করেছে শহরের মুচিরা। তাদের আরও অভিযোগ হলো তাদের কার্ডগুলো নিজের করায়ত্বে রেখে মদ ভাটির মালিক রাজু সে অনুযায়ী মদ নিয়ে আসলেও মুচিদের মধ্যে তা বিক্রি না করে যাদের কার্ড নেই তারাসহ উঠতি বয়সী যুবক-তরুণদের মধ্যেও মদ বিক্রি করছে। এমনকি অনেক সময় স্কুল-কলেজ পড়–য়া কিশোররাও ওই মদ ক্রয় করছে। এতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেমন মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে তেমনি মাদকাসক্তদের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে মাদকাসক্তদের দ্বারা নানা প্রকার অবৈধ কার্যকলাপ ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড ঘটছে প্রতিনিয়ত।

সম্প্রতি শহরের অন্যত্র মদ বিক্রির অভিযোগে ওঠার পর পুলিশ তৎপর হওয়ায় মদ ভাটির বাইরে মদ বিক্রি বন্ধ হয়েছে। সে সাথে পুলিশ আরও তৎপর রয়েছে মদ ভাটিতে কোন রকম অনিয়ম হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপরও যদি কোথাও কোন রকম অভিযোগ পাওয়া যায় তা তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিতে পুলিশ আন্তরিক বলে জানা গেছে। পুলিশ যেভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণে স্বদিচ্ছার পরিচয় দিচ্ছে, সে তুলনায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কোন তৎপরতা না থাকায় সার্বিকভাবে মাদকের করায়ত্ব থেকে সৈয়দপুরকে মুক্ত করা সম্ভব হচ্ছেনা। তাদের সহযোগিতা পেলে পুলিশ মাদক মুক্ত সৈয়দপুর গড়তে সফল হবে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
সম্প্রতি সৈয়দপুর থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যালয় নীলফামারীতে স্থানান্তরিত হওয়ায় মাদক বিক্রেতারা বেপরোয়া হয়ে পড়েছে বলে অনেকের অভিযোগ। তাই মাদক নিয়নন্ত্রণ অধিদপ্তরের কঠোর নজরদারী প্রয়োজন বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মুচি পিবিএকে জানায়, সরকারীভাবে গড়ে ওঠা ওই মদ ভাটিতে মদ ক্রয়ের জন্য মুচি, ডোম ও সুইপারদের জন্য মদ ক্রয়ের কার্ড সিস্টেম রয়েছে। যারা প্রতিবছর ওই কার্ড নতুন করে নবায়ন করা হয়। এসব কার্ডের সংখ্যা অনুযায়ী সে অনুপাতে মদ ভাটির জন্য বাংলা মদ বরাদ্দ হয়। এ সুযোগে মদ ভাটি মালিক শহরের প্রায় ১৬০ জন মুচির কার্ড নবায়ন করার নামে নিয়ে তা আর নির্দিষ্ট কার্ডধারীদের না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। একইভাবে ডোম ও সুইপারদের কার্ডও সে তার হাতে রেখেছে। আর সেই কার্ড অনুয়ায়ী প্রতিদিন ২শ’ লিটার মদ আসে এই ভাটিতে। কিন্তু প্রতিদিনই কি ওই সব কার্ডধারী মদ পান করে? না, অথচ প্রতিদিন আসা সবগুলো মদই বিক্রি করা হয়। তাহলে বাকি মদগুলো কাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে বা কোথায় যাচ্ছে।
এমন প্রশ্ন করলে মদ ভাটির ম্যানেজার জসিম উদ্দিন জানান, সরকারী নিয়ম অনুযায়ীই আমরা মদ বিক্রি করছি। এখানে কোন অনিয়ম নেই। আর মুচি, মেথর বা সুইপাররা অশিক্ষিত ও মূর্খ হওয়ায় তারা কার্ডগুলো সংরক্ষণ করতে পারেনা বলেই আমরা কার্ডগুলো নিজেদের কাছে রেখেছি।

এ ব্যাপারে জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর খতিবর আহমেদ মুঠোফোনে পিবিএকে জানান, এভাবে মাদকসেবীদের কার্ড সংরক্ষণ করাতে কোন দোষ নেই। বরং মদগুলো নির্দিষ্ট স্থানে এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তির বাইরে বিক্রি হচ্ছে কি না তা দেখার বিষয়। এমনটা হলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের জানালে আমরা তাৎক্ষনিক তা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিবো।

পিবিএ/জেএইচ/হক

আরও পড়ুন...