নেতা-কর্মীদের রাজপথের কর্মসূচিতে সক্রিয় হওয়ার আহবান নজরুল ইসলামের

জরুল ইসলাম খান
জাতীয় প্রেসক্লাবে নজরুল ইসলাম খান

পিবিএ,ঢাকা: দলীয় নেতা-কর্মীদেরকে রাজপথের কর্মসূচিতে আরো সক্রিয় হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে জিয়া আদর্শ একাডেমি আয়োজিত ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেলসহ সব কারাবন্দি নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক প্রতিবাদসভায় তিনি এ আহবান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা তো মুখে আন্দোলনের কথা বলেন, ঘরের মধ্যে সেমিনারে ফাটায়া দিচ্ছেন, কিন্তু যখন মানববন্ধন হয়, প্রতিবাদ সমাবেশ হয়, গণঅনশন হয়; তখন আপনারা কোথায় থাকেন। রাজপথে আপনাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন, যদি মানববন্ধনে ৫০ হাজার লোক হয়, তা হলে বড় কর্মসূচি দেয়ার চিন্তা করতে পারি, যদি এক লাখ লোক হয়, তা হলে আরও বড় কর্মসূচি দেব। আমরা তো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু আপনাদের উপস্থিতি তো থাকে না। তখন তো সাহস পাই না, আপনারা মুখে মুখে আন্দোলনের দাবি করছেন; কিন্তু রাজপথে তো নেই। মুখে আন্দোলনের কথা বাদ দেন, আপনারা রাজপথে আসেন।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেলসহ সব কারাবন্দি নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

দলীয় নেতাকর্মীরা ঘরের মধ্যে যে রকম জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন তা বাইরে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে নজরুল বলেন, ‘আমি স্পষ্ট বলে দিতে চাই- দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য যেকোনো আন্দোলনের প্রতি আমারও আগ্রহ আছে। আপনারা মুখে যেমন বলেন, কাজে দয়া করে তেমন দেখান, দেখবেন অনেক বড় আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যবস্থা হবে। সেটি না করা পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম জোরদার হবে না।’

দলীয় নেতাকর্মীদের রাজপথের আন্দোলনে আরো সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমি স্পষ্ট বলে দিতে চাই- দেশনেত্রীকে মুক্ত করার জন্য যেকোনো আন্দোলনের প্রতি আমাদেরও আগ্রহ আছে। আপনারা মুখে যেমন বলেন, কাজে দয়া করে তেমন দেখান। দেখবেন, অনেক বড় আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হবে। সেটা না করা পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম জোরদার হবে না।’

স্বাধীনতাযুদ্ধে নিজের অবদানের কথা সরণ করিয়ে দিয়ে নজরুল বলেন, ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে, ১৯ মার্চ গাজীপুরের জয়দেবপুরে আর্মির অস্ত্র কেড়ে নিয়ে আমরা লড়াই করেছিলাম। ঢাকায় মিছিল হয়েছিল ‘জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। আজকে ৭২ বছর বয়সে আমাকেই সেই কাজ করতে বলেন? না আপনাদেরও দায়িত্ব আছে। তার পরও বলছি- আছি আপনাদের সঙ্গে। শুধু সঙ্গে না, আপনাদের সামনেই থাকব। চলেন আমরা একসঙ্গে মাঠে নামি খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। তিনি দারুণভাবে অসুস্থ। তাকে যদি মুক্ত আলো-বাতাসে আনা না যায়, যদি তার সঠিক চিকিৎসা করা না যায়, তবে তাকে আমরা হারাব। তাই তার আন্দোলনের সঙ্গী হাবিব-উন নবী খান সোহেলের মতো যারা বন্দি আছেন, তাদের মুক্ত করার জন্য যে লড়াই প্রয়োজন, আসুন সেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিই।’

বিশ্বের কোনো স্বৈরাচার বেশি দিন টিকেনি উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, কোনো স্বৈরাচারী সরকার জনগণের আন্দোলনের মধ্যে টিকে থাকতে পারেনি।

‘ফিলিপাইন্সের মার্কোসের দমননীতির বিরুদ্ধে জনগণ যখন রাজপথে ট্যাংকের সামনে শুয়ে পড়েছিল, তখনই মার্কোসের পতন হয়েছিল। ওই পরিমাণ সাহস কী আপনাদের আছে? মুখে আছে, যেদিন কাজে দেখাতে পারবেন, সেদিন এই সরকারের পতন হবে’-যোগ করেন নজরুল।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আজম খানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, কৃষক দল নেতা মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন, এম জাহাঙ্গীর আলম, মৎসজীবী দল নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...