নোবিপ্রবি’র ছাত্রীকে শ্নীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টা, যুবককে গ্রেফতার

ওহী আলম, পিবিএ,নোবিপ্রবি : প্রাইভেট পড়িয়ে ফিরতে সময় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(নোবিপ্রবি) ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রীকে শ্নীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে হৃদয় নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে সুধারাম মডেল থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার(১৬ এপ্রিল) নোয়াখালী শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় । গ্রেফতারকৃত হৃদয় নোয়াখালী নোয়াখালী পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ওই ছাত্রী শহরের হাউজিং সোসাইটি এলাকায় একটি ছাত্রী মেসে থাকেন। তিনি গ্রেফতারকৃত হৃদয়ের বাড়িতে গিয়ে তার ছোট বোনকে প্রাইভেট পড়াতেন। গত ২ মার্চ রাত পৌনে ৯টার দিকে ওই ছাত্রী হৃদয়ের বোনকে পড়িয়ে মেসে ফিরছিলেন। পথে জেলা শিল্পকলা একাডেমির কাছে তার পথরোধ করে হৃদয়। হৃদয় তাকে মোটরসাইকেলে উঠতে বলে। তবে ভিকটিম তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে হাঁটা শুরু করেন। তখন হৃদয় ভিকটিমের হাত ধরে টানাটানি করে ও শ্নীলতাহানি করে। এক পর্যায়ে হৃদয়ের হাত থেকে ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ওই ছাত্রী। তখন হৃদয় লোহার রড দিয়ে ছাত্রীটির মাথার পেছনের অংশে আঘাত করে। এতে অচেতন হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন ওই ছাত্রী। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এরপর মাথায় আঘাতের কারণে ভিকটিম এক মাস স্মৃতিশক্তি হারিয়ে দীর্ঘদিন নোয়াখালী শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ও চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। স্মৃতি ফিরে পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে শিক্ষকদের ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি জানান ওই ছাত্রী।
পরবর্তিতে কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় মঙ্গলবার(১৬এপ্রিল) দুপুরে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে সুধারাম মডেল থানায় হৃদয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং পুলিশ বিকেলেই হৃদয়কে গ্রেফতার করে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগ করেন, কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হৃদয় শ্নীলতাহানির চেষ্টা করে। তাতেও ব্যর্থ হয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পেছন থেকে মাথায় আঘাত করে। তিনি হৃদয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
সুধারাম মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার হৃদয়কে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টোর ইমরুল কায়েস বলেন, “ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়ে জরুরি সভা আহবান করে এবং বিচারবিভাগকে প্রচলিত আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়, যেন ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নোয়াখালী তথা যেকোনো জায়গায় নিরাপদে চলাচল করতে পারে এবং এসকল অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হতে না হয়।”
এছাড়াও নোবিপ্রবির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মমিনুল হক বলেন, “যৌন হয়রানির শিকার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিকার ও বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ তাকে সহযোগিতা করেছে। ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অপরাধীকে তার শাস্তি পেতেই হবে।”
পিবিএ/ওএ/জেডআই

আরও পড়ুন...