পরিবারের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন টাঙ্গাইলের তুষার

পিবিএ, টাঙ্গাইল: আমাদের ভবনে আগুন লেগেছে। আমি বের হতে পারছি না। এখান থেকে বের হতে পারবো কিনা তাও জানি না। তোমরা আমাকে এখান থেকে বের করো। আমাকে সাহায্য করো। রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারের আগ্নিকান্ডে আটকা পড়ার পর নাহিদুল ইসলাম তুষার তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে এভাবেই জীবন বাঁচাতে সাহায্য চান।
কিন্তু কেউ তার এই আর্তনাত কে সাড়া দিতে পারেনি। তার আগেই ভবনে থাকা আগুনে প্রাণ হারায় তুষার।
নাহিদুল ইসলাম তুষার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা গোড়াই ইউনিয়নের ভানুয়াবহ গ্রামের মো. ইছাক আলীর ছেলে। তিনি এফআর টাওয়ারের দশ তলায় হ্যারিটেজ ট্রাভেলস এজেন্সিতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত চার বছর আগে মাহমুদার আক্তার নদীর সঙ্গে তুষারের দাম্পত্য জীবন শুরু হয় আর ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ভয়াবহ আগুনে তার সব কিছু শেষ হয়ে যায়।
তিনি মারা যাওয়ার আগে তার স্ত্রীকে বলে যায়, আমার জন্য সবাইকে দোয়া করতে এবং মাফ করে দিতে বলো। তুষার এই আর্তনাতে তার বাবা-মা, স্ত্রী ও ভাইদের কেউই সাড়া দিতে পারেনি।

শুক্রবার ভোরে তুষারের লাশ গ্রামের বাড়ি মির্জাপুরে পৌছালে সেখানে এক হৃদয় বিদায়ক দৃশ্যের দেখা যায়। ভাইয়ের লাশ সামনে রেখে নিশ্চিত মৃত্যু পথযাত্রী ভাইকে বাঁচাতে না পারায় ছোট ভাই তুহিনের আহাজারীতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠে। উপস্থিত এলাকাবাসীও তার এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে অশ্রুসজল হয়ে উঠেন।

ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার রাতে বনানী থেকে তুষারের মরদেহ মির্জাপুরের ভানুয়াবহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। শুক্রবার সকাল দশটায় গ্রামের বাড়িতে তার নামাজে জানাজা শেষে সামাজিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় এলাকার শতশত মানুষ অংশ নেন।
এদিকে বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকান্ডে মির্জাপুরের ছেলে তুষার নিহত হওয়ার খবরে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন এমপি।

পিবিএ/এমএ/হক

আরও পড়ুন...