পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের একটি টিম রাজধানীর চকবাজারের কামালবাগ এলাকায় অবৈধ পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযানের প্রস্তুতি নেয়। অভিযানে টিমটিকে সহযোগিতা করতে সঙ্গে ছিল পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অভিযান দলটি রাজধানীর চকবাজারের কামালবাগ এলাকার তিন তলা বিশিষ্ট একটা ভবনের সামনে পৌঁছায়। দলটির কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিলো এই ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় পলিথিন তৈরির একটি কারখানা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোয়েন্দা তথ্য মত ভবনে প্রবেশ করে অভিযান দলটি দেখে কারখানার তালা ঝোলানো। এছাড়া পলিথিন কারখানাটির সাইনবোর্ড আগে থেকে সরানো হয়েছে। পরে কোন উপায় না পেয়ে অভিযান দলটি কারখানার প্রবেশের গেটের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে।
ভিতরে প্রবেশ করতে দেখা যায় এ যেন পলিথিন তৈরির এক বিশাল রাজ্য। কারখানাটির ভিতরে সারিবদ্ধ রয়েছে উন্নত মানের বিদেশী পলিথিন তৈরির মেশিন। আরেকটু ভিতরে যেতে দেখা যায় ৪০ থেকে ৫০ বস্তা পলিথিন তৈরির কাঁচামাল পড়ে রয়েছে কারখানাটি। এছাড়া তৈরি করা অবস্থায় রয়েছে হাজার হাজার পলিথিনের ব্যাগ। তবে কারখানার ভিতরে কোন কর্মী বা কারোই কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। দেখলে মনে হয় এজন্য বেওয়ারিশ কোন কারখানা।
তবে অভিযানিক দলটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এর আগে তারা পাইকারি কিংবা খুচরা পলিথিন বিক্রেতাদের দোকানে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। কিন্তু আজকের অভিযানটি অনেক বড় সরাসরি পলিথিন তৈরির সঙ্গে জড়িত কারখানাগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে তাদের এই অভিযানের কথা আগে জানতে পেরে যায় কারখানার মালিক কর্তৃপক্ষ। তাই তারা কারখানা তালা দিয়ে কর্মীদের সহ পালিয়ে গিয়েছেন। তবে এখানে বিপুল পরিমাণের পলিথিন তৈরি করার কাঁচামাল পাওয়া গিয়েছে।
অভিযানে আরো দেখা যায়, পলিথিন তৈরির প্রথম কারখানা টিতে অভিযান শেষে সেটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়। এরপর কামালবাগ এলাকায় আরও তিনটি পলিথিন তৈরির বড় কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রথম কারখানাটির মতো ঐ তিন কারখানাটির মালিকও অভিযানের খবর পেয়ে আগেভাগে কারখানায় তালে দিয়ে চলে যান। সেই কারখানা গুলোতেও পলিথিন তৈরির বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল পাওয়া যায় এবং তৈরিকৃত অবস্থায় হাজার হাজার পলিথিন পাওয়া যায়। এসব মালামাল ও পলিথিন জব্দ করা হয় এবং কারখানা তিনটি কে সিলগালা করে দেওয়া হয় প্রথম কারখানাটির মতো। এছাড়া চারটি পলিথিন কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় যাতে করে তারা পরবর্তীতে পুনরায় কারখানা চালু না করতে পারে।
অভিযান শেষে অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব বেগম রুবিনা ফেরদৌসী বলেন,আমরা চকবাজারের কামালবাগ এলাকায় চারটি পলিথিন ব্যাগ তৈরি করার কারখানাতে অভিযান পরিচালনা করি। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের অভিযানের খবর আগেই পেয়ে যায়। তারা অভিযানের খবর পেয়ে কারখানাগুলোকে তালা দিয়ে চলে যায়। পরে আমরা তালা ভেঙ্গে কারখানাগুলোর ভিতরে প্রবেশ করি। পলিথিন তৈরিতে কাঁচাম মালামাল জব্দ করি। এছাড়া কারখানা গুলোকে সিলগালা করে দেই। বর্তমান সরকার পলিথিনের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। সে অনুযায়ী নিষিদ্ধ পলিথিন এর উৎপাদন বন্ধ করতে আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদের অভিযান চলমান থাকবে।