পিবিএ,ঢাকা: হঠাৎকরে দলীয় সিদ্ধান্ত বদল করে পাঁচ সংসদ সদস্যের শপথ গ্রহণের পর দল ও জোটে সৃষ্ট ‘বিব্রতকর’ পরিস্থিতি দ্রুতই কাটিয়ে উঠতে চায় বিএনপি। এ জন্য বারবার ঐক্যের ওপর জোর দিচ্ছে দলের হাইকমান্ড। একই সাথে আন্দোলনের মাঠে থাকা দলটির মিত্রদের মনোভাবও বোঝার চেষ্টা করছে । সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হতে পারে আজ শনিবার । দলীয় একাধিক সুত্রে জানা গেছে, বৈঠকে শপথগ্রহণ ইস্যুতে দলীয় সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করবেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জোট ও ঐক্যফ্রন্টের সাথে সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতেও পদক্ষেপ নেয়া হবে এ বৈঠক থেকে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য জানান, রাজনৈতিকভাবে বিরোধী শিবিরে এক ধরনের অস্থিরতা আছে সত্যি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে চরম অপ্রত্যাশিত ফলাফলের পর এ ধরনের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ মুহূর্তে পলিসি ঠিক করে সামনে এগুবে বিএনপি।
বিএনপি ও গণফোরামের সাতজন সংসদ সদস্য শপথ নেয়ার কারণে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিষয়টি এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। অনেকেই আবার ২০দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছেন । দুই জোটের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিএনপি। এ নিয়ে দলটি এখন অস্বস্তিতে আছে।
গত সপ্তাহে ২০ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপির পুরনো শরিক দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি। জোটের আরেক শরিক লেবার পার্টি বলেছে, বিএনপি ২৩ মের মধ্যে ঐক্যফ্রন্ট না ছাড়লে তারা পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে ভাবতে বাধ্য হবেন।
এদিকে বিজেপি জোট ছাড়ার তিন দিনের মাথায় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার আলটিমেটাম দিয়েছে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে দলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে যেসব অসঙ্গতি আছে, তা নিরসন করা না হলে ৮ জুন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জোটে যেসব অসঙ্গতি রয়েছে, তা দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে অবিলম্বে। এতে সঙ্কটের সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক একটি দলের সভাপতি বলেন, দল হিসেবে বিএনপির রাজনীতি করতে হলে আগে রাজনৈতিক পলিসি ঠিক করতে হবে। নির্বাচন-পূর্ব ও পরবর্তী পরিস্থিতি আমাদের সামনেই ঘটছে। কিন্তু নিজেদের অবস্থান আগে স্পষ্ট করতে হবে। এতে করে দৃশ্যমান যে সঙ্কট দেখা যাচ্ছে, তা দূর হতে সাহায্য করবে।
২০ দলীয় জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক দলগুলোর নেতারা মনে করছেন, পরিস্থিতি পুরোপুরি পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি জোটের ঘন ঘন বৈঠক করা দরকার। অনেক নেতাই মনে করেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কারণেই ২০ দলীয় জোটের গুরুত্ব অনেকখানি কমে গেছে।
পিবিএ/এইচটি