পিবিএ, ঢাকা : ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শিথিল পর্বের দ্বিতীয় দফা শুরু হতে চলেছে।
আজ, সোমবার থেকে শপিং মল, হোটেল, রেস্তরাঁ, বেশি সংখ্যক কর্মী নিয়ে বহু সরকারি ও বেসরকারি অফিস খুলবে। দোকান, বাজার, ধর্মীয় উপসনালয় আগেই খুলেছিল।
এ বার বহু পর্যটন কেন্দ্রও খুলতে চলেছে। এমনকি কিছু স্কুলের তরফে প্রশাসনিক কাজের জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে হাজির হতেও বলা হয়েছে।
৭০ শতাংশ কর্মী নিয়ে সরকারি অফিস খুললেও সরকারি নির্দেশিকা মেনে দূরত্ববিধি বজায় রাখা এবং মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক।
পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনিক সূত্রের খবর, হঠাৎ কোনও সরকারি কর্মীর শরীর খারাপ লাগলে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। সরকারি দফতর স্যানিটাইজও করা হচ্ছে। অফিসে ঢোকার মুখে থাকছে স্যানিটাইজার। একই সতর্কতা মেনে চলার কথা বেসরকারি অফিসেও।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ক’দিন ধরে গণপরিবহণ চালু হলেও কলকাতা-সহ রাজ্যের সর্বত্র রাস্তায় বেরোনো মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিল না।
আজ থেকে ভিড় আরও বাড়ার কথা। সরকারি ও বেসরকারি বাস সংগঠনগুলি বাসের সংখ্যা বাড়ানোর আশ্বাস দিলেও তা যথেষ্ট হবে না বলে আশঙ্কা থাকছে। ফলে দুর্ভোগ বাড়ার সঙ্গে দূরত্ববিধি ঘুচে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। একই সঙ্গে প্রচুর গাড়ি বেরোতে পারে। ফলে আচমকা যানজটও বাড়তে পারে। আমপানে বহু ট্র্যাফিক সিগন্যাল ভেঙে গিয়েছিল। বেশ কিছু এখনও সারাই হয়নি। ফলে যান সামলাতে পুলিশেরও নাকাল হওয়ার আশঙ্কা।
করোনায় সংক্রমিতের হার যখন নিত্যদিন বাড়ছে, তখন আরও বেশি করে কাজকর্ম শুরুর এই পরিস্থিতিতে ভয় নিয়েই রাস্তায় বেরনোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন মানুষ। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, কন্টেনমেন্ট এলাকার বাইরে কাজকর্ম চালু করার কথা। এ রাজ্যে এখন অবশ্য ‘কন্টেনমেন্ট এলাকা’ বলতে আক্রান্তের বাড়ি এবং পাশের বাড়িকেই বোঝানো হচ্ছে। ফলে কার্যত কোনও রাস্তা বা পাড়ায় এখন আর চলাফেরায় নিয়ন্ত্রণ নেই।
এ দিন স্বাস্থ্য দফতর টুইটারে এক মিনিট ২৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো আপলোড করে। সেখানে করোনা হলে কী করণীয়, তা নিয়ে প্রচারের পাশাপাশি সুরক্ষাবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, মার্কিন সংস্থার তৈরি করোনা নমুনা পরীক্ষার একটি যন্ত্র এ মাসের শেষে এসএসকেএমে বসার সম্ভাবনা। এক দিনে চার হাজার নমুনা পরীক্ষা হতে পারে তাতে।
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘টেস্টিং সেন্টারও বাড়ানো হচ্ছে। এই সপ্তাহে সিউড়ি, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে আরটি-পিসিআর ল্যাব যুক্ত হয়েছে। এর পর রায়গঞ্জ, কোচবিহার, নদিয়ায় হবে।’’ রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘সংক্রমণ হয়তো বাড়তে পারে। সচেতন থাকতে হবে, নির্দেশিকা যা রয়েছে সে সব মেনে চলুন।’’
ধর্মস্থান ও পর্যটনকেন্দ্র খোলা নিয়ে বিতর্ক যদিও থাকছে। আমেরিকার জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিয়োলজিস্ট পর্ণালী ধর চৌধুরী স্পষ্টই বলছেন, মাস্ক পরে গেলেও ধর্মস্থানে ঢোকা ও বেরনোর পথে পশ্চিমবঙ্গের মতো জনবহুল রাজ্যে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা কার্যত অসম্ভব।
পিবিএ/আর্ন্তজাতিক ডেস্ক/এমএ