পাঁচবিবিতে ছোট যমুনা নদীতে ইজারা ছাড়াই বালু উত্তোলন

মোঃ বাবুল হোসন,পাঁচবিবি (জয়পুরহাট): জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের বাগুয়ান এলাকায় ছোট যমুনা নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি ও যুবদল নেতা কেরামত আলী ও কারিমুল হোসেনের বিরুদ্ধে।

সরকারি কোনো ইজারা কিংবা বৈধতা না থাকলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনের পর দিন অবাধে বালু উত্তোলন করছে তারা। ঐ বিএনপি যুবদল নেতাকে কমিশনের বিনিময়ে চলছে এ বালু ব্যবসা।

জানা যায়, কেরামত আলী পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জি ইউনিয়নের কোতোয়ালীবাগ ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও কারিমুল হোসেন স্থানীয় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

এদিকে বালুর ঘাটের অনুমোদন না থাকায় সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, অপরদিকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ও নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করায় আশেপাশের ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে নদী গর্ভে। নদীর পাড় হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। এ নিয়ে স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগ।

স্থানীয়রা জানান, বাগুয়ান এলাকার ছোট যমুনা নদীর বালু ঘাটটিতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করতেন খোকন হোসেন নামে এক ব্যক্তি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকে ঐ এলাকায় ছোট যমুনায় বালুঘাট নিয়ন্ত্রণে নেয় কেরামত ও কারিমুল।

অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাড় বিলীন হয়ে যাচ্ছে অপরদিকে ফসলের জমি নদী গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। তারপরও স্বানীয়রা ভয়ে কিছু বলতে পারে না। উল্টো যারা বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। এক প্রকার তাদের জ্বালায় অতিষ্ঠ ও আতঙ্কিত তারা। আর সবকিছু দেখেও জেনো জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন নীরব।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাগুয়ান এলাকায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে নদীর পূর্বপাড় থেকে ট্রাক্টরে করে সেসব বালু বিক্রি করা হচ্ছে। নদী থেকে নিযমি বালু উত্তোলন করায় নদীর পাড় ধ্বস নেমে এসেছে। বালু উত্তোলন করায় আবার অনেক ফসলি জমি নদীর গর্ভে হারিয়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাঁচবিবি উপজেলার একমাত্র বাগজানা বালু মহাল সরকারী ভাবে ইজারা দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলায় আর কোন বালু মহালের ইজারা নেই। তারপর ক্ষমতার প্রভাবে ছোট যমুনা নদীর একাধিক পয়েন্টে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে বালু ব্যবসায়ীরা।

দেখায় যায়, বাগুয়ান নদীতে বালু উত্তোলনের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন ফারুক হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে থেকে এ বালুঘাট আমি দেখাশোনা করি। আগে এখানে খোকন নামের একজন বালুর ব্যবসা করতো।

অবৈধ ভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা কেরামত ও কারিমুলকে ম্যানেজ করে এ ব্যবসা করা হচ্ছে। বিনিময়ে তাদেরকে কমিশন দিতে হয়। এভাবেই চলছে বালুরঘাট।

অবৈধ বালুঘাটের বালু ব্যবসায় কমিশন নেওয়ার বিষয়ে স্থানীয় যুবদল নেতা কারিমুল হোসেন বলেন, এটির কোন ভিত্তি নেই। এ বালুঘাটের সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত নই। তবে সরকার পরিবর্তনের পরে এ বালুঘাট খোকনকে কিছু টাকা দিয়ে কেরামত চাচা এ বালুঘাটের পার্টনার হয়েছে।

পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জি ইউনিয়নের কোতোয়ালীবাগ ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কেরামত আলী বলেন, এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট কথা। তবে এ বিষয়ে গত ৫ আগস্টের আগে কথা হয়েছিল।

পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমানা রিয়াজ দ বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত ছিলাম না। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি আইন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবো।

আরও পড়ুন...