রাজন্য রুহানি,জামালপুর: জামালপুর শহরে কাজের পাওনা টাকা চাওয়ায় শামীম হোসেন (৩০) নামে এক ওয়ার্কশপ শ্রমিককে মারধর করেছেন সেলিম মিয়া (৪৫) নামে এক ট্রাক মালিক। এ ঘটনায় ওই ট্রাক মালিকের শাস্তির দাবিতে সকাল থেকে জামালপুর বাইপাস মোড় অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এতে জামালপুর-টাঙ্গাইল ও জামালপুর-শেরপুর রুটে দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ প্রশাসন বিচারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তবে ওই ট্রাক মালিককে গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জেলার সমস্ত ওয়ার্কশপ বন্ধ ঘোষণা করেছে ওয়ার্কশপ শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা।
মারধরের শিকার শামীম হোসেন পৌরসভার জঙ্গলপাড়া বোর্ডঘর এলাকার মৃত খোয়াজ আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি ছনকান্দা এলাকায় বসবাস করেন। শহরের ফেরিঘাট এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করেন তিনি। অভিযুক্ত ট্রাক মালিক সেলিম মিয়া সদর উপজেলার ছনকান্দা এলাকার আব্দুল মোতালেবের ছেলে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে শহরের বাইপাস মোড়ে জড়ো হোন শ্রমিকরা। তারা শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। দীর্ঘ ৩ ঘন্টা ধরে সড়ক অবরোধ রাখায় জামালপুর-টাঙ্গাইল ও জামালপুর-শেরপুর রুটে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন।
সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ প্রশাসন। পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ট্রাক মালিককে গ্রেফতার ও বিচারের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয় শ্রমিকরা।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, প্রায় তিন মাস আগে ট্রাকের কাজ করিয়েছেন সেলিম মিয়া। কাজ করার পর শামীমের ৪শ টাকা মজুরি বাকী রাখেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শামীম পাওনা টাকা চাইলে তাকে বেধড়ক মারধর করেন সেলিম। এতে শামীমের কানের পর্দা ফেটে যায় এবং শরীরের নানা স্থানে জখম হয়। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শামীম।
এ বিষয়ে মারধরের শিকার শামীম জানান, আমি তার গাড়ির কাজ করেছি ৩ মাস আগে। এরমধ্যে তিনি আমার পাওনা ৪শ টাকা দেই দিচ্ছি করে আর দেন নাই। গতকাল আমি তার কাছে পাওনা টাকা চাইলে তিনি রেগে গিয়ে কান প্যাঁচিয়ে চড় মারেন। একই সঙ্গে কিল-ঘুষি দিয়ে আমাকে মাটিতে ফেলে দেন। আমার কান দিয়ে রক্ত পড়তে থাকলে স্থানীয়রা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
জেলা ওয়ার্কশপ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নেছার উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মানিক শেখ বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত ট্রাক মালিক সেলিমকে গ্রেপ্তার করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা জামালপুরের সব ধরনের ওয়ার্কশপ বন্ধ রাখবো। একমিনিটের জন্যও কোনো ওয়ার্কশপ খোলা হবে না এবং শ্রমিকরা কোনো গাড়ির কাজ করবে না।’
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ট্রাক মালিক সেলিম মিয়ার মোবাইলে একাধিক কল করা হলেও তিনি কল ধরেননি।
সদর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আবু ফয়সল মো. আতিক জানান, অভিযুক্ত ট্রাক মালিক সেলিমকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।