পীরগঞ্জে জনপ্রিয় হচ্ছে ধানের চারা রোপন যন্ত্র ট্রান্সপ্লান্টার

পিবিএ,পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতি‌নি‌ধি: ম্বল্প সময়ে ধানের চারা রোপন ও খরচ কম হওয়ায় রংপুরের পীরগঞ্জে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ধানের চারা রোপন যন্ত্র রাইস ট্রান্সপ্লান্টার। বিগত পাঁচ বছর ধরে উপজেলায় পরীক্ষামূলক ভাবে ধানের চারা রোপণ করার জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তদারকিতে খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় চলতি মরসুমেও জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপন করবেন প্রায় শতাধিক কৃষক।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নের ঘোষপুর ব্লকে ফলন বাড়াতে সমলয় পদ্ধতিতে যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে বোরে ধানের চারা রোপন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ঘোষপুর গ্রামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা বেগম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে রাইস প্লান্টারের মাধ্যমে বোরো ধানের চারা রোপন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল।

প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উপ-পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা এনামুল হক, রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আফজাল হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার, কৃষক বেনজির হোসেন মন্ডল প্রমুখ।

গত কয়েক বছর থেকে উপজেলার শানেরহাটসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে পরিক্ষা মূলক ভাবে জমিতে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপন করা হয়েছিল। কৃষি যান্ত্রিকীকরন এই পদ্ধতি উপজেলার কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। চলতি মরসুমে উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নের ঘোষপুর গ্রামে সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হচ্ছে। এবার ৫০ একর জমিতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। একই জাতের বীজ একই সময়ে ট্রের মাধ্যমে বসানো হয় ২০ শতক জমির বীজ তলা থেকে উৎপন্ন বীজ দিয়ে ৫০ একর জমিতে রোপন করা যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। ঘোষপুর গ্রামের কৃষক নির্মল চন্দ্র, আকমাল হোসেন, কায়সার মন্ডল, নুরুল ইসলাম, জলিল মিয়া, লেবু মিয়া, কাজিজুর রহমান, আতিয়ার রহমান জানান, সময়ের ব্যবধানে বিগত কয়েক বছর থেকে প্রযুক্তি ও যন্ত্র ব্যবহারে আমাদেও কষ্ট অনেকটা লাঘব হয়েছে। এখন শ্রমিকের জন্য অপেক্ষায় আর দিন গুণতে হয় না। প্রযুক্তি ও মেশিন ব্যবহার করছি। এতে স্বল্প সময়ে কম খরচে কয়েক বিঘা জমিতে চারা রোপণ করা যায়। যন্ত্র ব্যবহারের ফলে সময় ও টাকা দুটোই ব্যয় হয় কম।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম ও সাদেকুল ইসলাম জানান, এই পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপন অনেক ভালো, সময় ও শ্রমিক লাগে কম। রোপনে শৃংখলা এবং ধানের ফলন অনেক বেশি হয়। এতে কৃষক লাভবান হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজামান সরকার জানান, বিগত পাঁচ, ছয় বছর ধরে এই উপজেলায় কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার এর মাধ্যমে কম সময়ে স্বল্প খরচে ধানের চারা রোপন করা যায়। সমলয় পদ্ধতির ফলে চারা কম লাগে ফলনও অনেক বেশি হয়। আশা করছি কৃষকদের চাহিদার কারণে এই পদ্ধতি দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এই উপজেলায় আগামী বছর আরও বেশী প্রসার হবে। একই জাত ব্যবহার, ট্রেতে বীজ বপন, কম বয়সের চারা রোপন, চারা রোপনে রাইচ ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহারে চারা আঘাত পায় না ফলে জমিতে রোপনের সাথে সাথেই সেরে ওঠে চারা। এতে ব্যয় কম হলেও উৎপাদন হয় বেশি এবং কম সময়ে স্বল্প খরচে সাশ্রয়ী প্রযুক্তি কৃষক লাভবান হবে। সমলয় চাষাবাদে উৎপাদন খরচ সাশ্রয় এবং কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ভরা মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের সংকট সমাধান সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য যান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাইচ ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ৪৫ থেকে ৬০ মিনিটে এক বিঘা জমিতে চারা রোপন করা যাবে। এ বিষয়ে কৃষকদের কারিগরি সুবিধা ও সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।

আরও পড়ুন...