পুরষ্কার পেলো রয়টার্সের দুই সাংবাদিক

রয়টার্সের দুই তরুণ প্রতিবেদক ওয়া লোন এবং কেই সো ও

পিবিএ ডেস্ক: সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এবং আমেরিকান সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস – এপি।

এছাড়া মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস ও দ্য ওয়াশিংটন পোস্টও পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছে। পুলিৎজার পুরস্কারকে সাংবাদিকতার `নোবেল’ বলে গণ্য করা হয়।

গতকাল সোমবারের ২০১৯ সালের পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে পুরস্কার প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে আগুন ও গণহত্যার ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন করে পুলিৎজার জয় করে রয়টার্স। অন্যদিকে ইয়েমেন যুদ্ধের নৃশংসতা তুলে ধরায় পুলিৎজার জিতেছে এপি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স রোহিঙ্গা গণহত্যা ছাড়াও মধ্য আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে চাওয়া শরণার্থীদের ছবি তুলে আরও একটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে। আর এর মাধ্যমে টানা দ্বিতীয়বার পুলিৎজার পুরস্কার পেল রয়টার্স। ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে নামী এই পুরস্কারটি সাতবার পেল এই ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে কাজ করার জন এবারের পুলিৎজার পুরস্কার পাওয়া রয়টার্সের দুজন সাংবাদিক গত ৪৯০ দিন ধরে মিয়ানমারে কারাবন্দী। রাখাইনে নৃশংস রোহিঙ্গা গণহত্যার চিত্র উন্মোচনে ভূমিকা রাখেন তারা।

গতকাল সোমবারের ২০১৯ সালের পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে পুরস্কার প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ। মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস ও দ্য ওয়াশিংটন পোস্টও দুটি করে পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছে।

এই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের গোপনীয় নথি সংগ্রহ ও প্রাপ্তি উপনিবেশিক যুগের অফিসিয়াল সিক্রেটস আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ তুলে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে তারা মিয়ানমারের কারাগারে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন।

পুলিৎজার জয়ের খবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রয়টার্সের শীর্ষ সম্পাদক স্টিফেন জে অ্যাডলার বলেন, এই স্বীকৃতি অত্যন্ত রোমাঞ্চকর। কিন্তু সাংবাদিকরা এখনও কারাবন্দি থাকায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনের জন্য ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পাশাপাশি মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) পুরস্কৃত হয়েছে। ইয়েমেন যুদ্ধের নৃশংসতা তুলে ধরায় পুলিৎজার জিতেছে এপি।

রয়টার্সের দুই তরুণ প্রতিবেদক ওয়া লোন এবং কেই সো ও একটি গণকবরের খোঁজ পান। যেটিতে মানুষের হাড়গোড় মাটির ওপর থেকেই দেখা যায়। এরপর হত্যাকারী, প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন তৈরি করেন তারা।

গ্রামবাসীর কাছ থেকে তারা ভয়ংকর তিনটি আলোকচিত্র পান। এতে দেখা যায়, ১০ রোহিঙ্গা মুসলমানকে বেঁধে হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তৃতীয় ছবিটিতে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে টুকরো টুকরো করা ও গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া তাদের মরদেহ দেখা গেছে।

এ ছাড়া একটি অগভীর কবরে তাদের একসঙ্গে দাফন করার দৃশ্যও ওই ছবিতে রয়েছে।

কিন্তু ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ওয়া লেন ও কেই সো ও তাদের প্রতিবেদন শেষ করার আগেই গ্রেফতার হন। প্রতিবেদন প্রকাশে বাধা দিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের এই অপচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...