পেকুয়ায় নামের সাথে নাম মিল থাকায় বিনা অপরাধে জেল

সাইদুল ইসলাম ফরহাদ,কক্সবাজার: কক্সবাজারের পেকুয়ায় পিতার নাম ও নিজের নাম অন্য জনের নামও অন্য জনের পিতার নামের সাথে মিল থাকায় বিনা অপরাধে ২৭ দিন জেল কাটল জয়নাল আবেদীন।

তিনি বারবাকিয়া ইউনিয়েন ১ নং ওয়ার্ড ভারুয়াখালী এলাকার শব্বির আহমদের পুত্র।

একই ইউনিয়নের বারাইয়াকাটা এলাকার জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী শাহানা আক্তার বাদী হয়ে ২০১২ সাথে চকরিয়া জজ আদালতে পারিবারিক মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ১৯/২০১২ ইংরেজী, শাহানা আক্তার তার স্বামীর সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় তার মোহরানার দাবিতে এই মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার আর্জিতে তার স্বামীর নাম জয়নাল আবেদীন পিতাঃ শবির আহমদ বারবাকিয়া ইউনিয়ন উল্লেখ করেন কিন্তু কোন ওয়ার্ড ও কোন গ্রাম উল্লেখ না থাকায় পেকুয়া থানা পুলিশ ১২/০২/২০২০ ইং তারিখে জয়নাল আবেদীন পিতা: শবির আহমদ, গ্রাম: বারাইয়াকাটা এর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করে জয়নাল আবেদীন পিতা: শব্বির আহমদ, গ্রাম ভারুয়াখালীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। প্রকৃতপক্ষে জেলে থাকা জয়নাল আবেদীন নিরপরাধ তার স্ত্রীর নাম মরিয়াম বেগম, তিনি চকরিয়া কৈয়ারবিল ইউনিয়েন বাংলা পাড়া মোহাম্মদ হোসাইনের মেয়ে।মামলার বাদী শাহানা আক্তার সাথে জেল কাটা জয়নালের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। জেল কাটার আগে তাদের সাথে জীবনে কখনো দেখাও হয়নি। ১নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ নুরুল ইসলামের ভুল তথ্যতে পেকুয়া থানা পুলিশ তাকে জেলে প্রেরণ করেন।

জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী মরিয়াম বেগম জানান, আমার স্বামীকে চৌকিদার নুরুল ইসলাম ডেকে নিয়ে পুলিশকে তুলে দেন আমরা যখন চৌকিদারকে জিজ্ঞেস করি তখন বলেন বন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।এবং আমাকে ২০ হাজার টাকা দাও আমি তোমার স্বামীকে মুক্ত করে আনব। তাৎক্ষণিক আমার হাতে টাকা না থাকায়, আমি আমার অলংকার স্বর্ণ বন্ধক দিয়ে ২০ হাজার টাকা চৌকিদারের হাতে তুলে দিই। আরো বলে তোমাদের কাউকে থানায় যেতে হবে না, আমি তোমার স্বামীকে নিয়ে আসব। পরে দেখি আমার স্বামীকে বারাইয়াকাটার নারী সংক্রান্ত একটা মামলা দিয়ে জেলে পাঠাই।

ভুক্তভোগী জয়নাল আবেদীন বলেন, মামলা বাদী শাহানা বেগমকে আমি চিনিনা, তার সাথে আমার জীবনে দেখা হয়নি চৌকিদার ও পুলিশ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করে জেলে প্রেরণ করে। আমি এখনো প্রাণের ভয়ে আছি, আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান,পেকুয়া থানার এস আই সুমন সরকার তাকে মুঠো ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন। এটার সুস্থ তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি দাবি করছেন।

এই বিষয়ে গ্রাম পুলিশ নুরুল ইসলামের সাথে কথা বলে তিনি সব অভিযোগ অশ্বীকার করেন।

এস আই সুমন সরকার বলেন, আমি জয়নালকে হুমকি দিই নি, চৌকিদার নুরুল ইসলামকে হুমকি না দেয়ার জন্য বলেছি।

এই বিষয়ে বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ.এম বদিউল আলম জানান দুই,জয়নালের মাঝে কোন সম্পর্ক নাই,যে জয়নাল জেল কেটেছে সে নিরপরাধ,সে হয়রানির শিকার হয়েছে, এটার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।
এস আই সুমন সরকার বলেন, আমি জয়নালকে হুমকি দিই নি, চৌকিদার নুরুল ইসলামকে হুমকি না দেয়ার জন্য বলেছি।

এ বিষয়ে পেকুয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কামরুল আজম জানতে চাইলে তিনি বলেন,সে যদি নিরপরাধ হয়ে জেল কাটে এ বিষয়টা মর্মান্তিক,আমার কাছে আসলে আমি তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।

পিবিএ/এসডি

আরও পড়ুন...