উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া (পটুয়াখালী): শরতের আকাশে ভাসছে সাদা মেঘের ভেলা। বইছে মৃদু দখিনের বাতাস। সাগরে ছোট ছোট ঢেউ তীরে এসে আছড়ে পড়ছে। এমন দৃশ্য উপভোগ করেছেন পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা।
সৈকতের বালিয়াড়িতে নোনা জলে গা ভাসিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতেছেন কেউ। অনেকে ঘুরছেন ঘোড়া,মোটরসাইকেল কিংবা ওয়াটার বাইকে। কেউ বা আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। মোট কথা শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটিতে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) কুয়াকাটার সৈকতে ভিড় জমিয়েছে হাজারো পর্যটক।
পর্যটকের এমন বাড়তি উপস্থিতিতে অনেকটা উচ্ছসিত ব্যবসায়িরা। বেচাকেনা বেড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বুকিং রয়েছে অধিকাংশ হোটেল-মোটেল। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। তবে মোটরসাইকেল চালক ও ক্যামেরাম্যানদের উৎপাতসহ লকার সংকটের কথা জানিয়েছেন পর্যটকরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই সৈকতে এ সকল পর্যটকের আগমন ঘটে। এসব পর্যটক সমুদ্র দর্শনের পাশাপাশি রাখাইন পল্লী, রাখাইন মার্কেট, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ মন্দির, ঝাউবাগান, গঙ্গামতির লেক, লাল কাকড়ার চর, লেম্বুর বন, আন্ধার মানিক নদী মোহনা, ফাতরার বনসহ দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একই সাথে ঝিনুক মার্কেট, ফিশ ফ্রাই ও খাবার হোটেলসহ পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে বেচাকেনায় যেন ধুম পরে গেছে। দীর্ঘ প্রায় তিন মাস পর পর্যটকের এমন বাড়তি উপস্থিতিতে অনেকটা উচ্ছসিত ব্যবসায়ীরা।
পর্যটক ফরিদ হোসেন বলেন, পূজোর ছুটি পেয়েছি, তাই কুয়াকাটা বেড়াতে এসেছি। এখানকার পরিবেশ সবকিছুই ভালো লেগেছে।
পর্যটক সোহেল-রুমানা দম্পতি বলেন, সমুদ্রের মোহনীয় গর্জন দারুণ লেগেছে। তবে এখানে সকালে এসে লকার খুঁজেছি। হাতে গোনা কিছু থাকলেও তা খালি পাইনি। বাধ্য হয়ে হোটেলের কক্ষ ভাড়া নিয়েছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, বিচে অবাধে মোটরসাইকেল চলাচল করছে এবং চালকরা বারবার তাদের মোটরসাইকেলে ঘোরার জন্য বলছে। বেশ কয়েকজনকে ঘুরবো না বলে জানানোর পরও আবারও কয়েকজন এসে বিরক্তি করেছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কুটুম’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, একই স্থানে দাঁড়িয়েই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়। এছাড়া এখানে রয়েছে প্রকৃতি ঘেরা সৌন্দর্য। যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নতি হওয়ায় ঢাকা থেকে আসতে সময়ও কম লাগে। তাই ভ্রমণ পিপাসুরা কুয়াকাটা সৈকত বেছে নেয়।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো.আনছার উদ্দিন বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সাদা পোশাকের আইনশৃংখলা বাহিনী কাজ করছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ করতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।