কাগজসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কচুপাতা ও কলাপাতা হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে কাগজসহ শিক্ষা উপকরণের দাম কমানো না হলে সর্বাত্মক আন্দোলনের হুঁশিয়ারি এবং শিক্ষামন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেছে সংগঠনটি।
ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজার সঞ্চালনায় মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু, ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক লাবলী হক, ঢাবি সংসদের আহ্বায়ক কাজী রাকিব হোসাইনসহ অন্যান্য নেতারা।
ছাত্র ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, ‘করোনার মধ্যে এমনিতেই শিক্ষা ব্যবস্থা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। মূল্যস্ফীতির কারণে খাদ্যের বা নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার বিষয়টি যেভাবে আলোচনায় আসে, শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়ার বিষয় সেভাবে আলোচনায় আসে না। মানুষের খরচের বোঝা আরও ভারী হচ্ছে। নিম্নবিত্ত পরিবার সন্তানেরা পড়াশোনা চালাতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে, এমনকি পড়াশোনা বন্ধ করার মতো সিদ্ধান্তও নিচ্ছে। বইয়ের পাশাপাশি শিক্ষার জন্য অপরিহার্য শিক্ষার বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ পর্যন্ত। এতে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর যেমন বাড়তি চাপ পড়ছে, তেমনি অনেক নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ারও উপক্রম হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দায়িত্ব হস্তান্তর করুন। ১৫ দিনের মধ্যে বাজারের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আমরা তথাকথিত উন্নয়ন চাই না। দুমুঠো খেয়ে-পরে বাঁচতে চাই। এই সরকার স্বাধীনতার অঙ্গীকার ভুলে গেছে। দেয়ালে মানুষের পিঠ ঠেকে গেছে। তারা আর ঘরে বসে থাকবে না। ৬২’র শিক্ষা আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতনের বীজ রোপিত হয়েছে। অনতিবিলম্বে শিক্ষা উপকরণের দাম নিয়ন্ত্রণ না করা হলে আমরাও শিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করব।’
সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু বলেন, ‘বর্তমানে খাতা, কলম ও ক্যালকুলেটরসহ সব শিক্ষা উপকরণের দাম ১০ থেকে ১৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাসিক বেতনও অনেক বেড়ে গেছে। শিক্ষা উপকরণের মূল্য এমন বেশি থাকলে শিক্ষার্থীরা কীভাবে পড়াশোনা করবে? করোনা মহামারির কারণে সরকারের কথা ছিল যে, শিক্ষার্থীদেরকে প্রণোদনা দেওয়া হবে, বৃত্তি দেওয়া হবে এবং আবাসিক শিক্ষার্থীদেরকে মিলের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু সরকার তা করেনি। এ অবস্থা চলতে থাকলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারবে না। ধীরে ধীরে সাক্ষরতার হার কমে যাবে। মেধাশূন্য জাতি পারবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে, প্রতিবাদ করতে।’