প্রতিশ্রুতির এক বছর অতিবাহিত হলেও ব্রীজ নির্মানে উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের

পিবিএ,চুয়াডাঙ্গা: জীবননগরে ভৈরব নদীর উপর কচুরীপানার সেতু তৈরী করে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাতায়াত করতো। বৃষ্টি এলেই ঘটতো মহা বিপত্তি। হাটু পানিতে নোংরা পঁচা কাঁদামাটিতে ভিজে অনেক সময় ক্লাস করতে হতো তাদের । নানা রকম সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হতো অনেকেই। ফলে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি হার একেবারই কম হতো। এ রকম শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগের কথা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তুলে ধরেছিল স্থানীয় সাংবাদিকরা। এমনকি দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জোর দিয়ে বিষয়টি তুলে ধরা হয়। তারপর হতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

এলাকাবাসী প্রশাসনের নিকট একটি ব্রিজ নির্মানের জোর দাবী জানালেও কোন রকম কাজ হয়নি আজ পর্যন্ত। সে সময় জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো আব্দুল লতিফ অমল ও জীবননগর পৌর মেয়র আশ্বাস দেন চুয়াডাঙ্গা -২ আসনের এমপি জনাব হাজী আলী আজগর টগরের মাধ্যমে বিশেষ বরাদ্দ এনে এখানে একটি ব্রিজ নির্মান করবেন। কিন্তু জনপ্রতিশ্রুতির এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোন ব্রীজ নির্মানের আলামত পাওায়া যাচ্ছে না। এরই এক পর্যায়ে জীবননগর উপজেলা শহরের দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জীবননগর বন্ধু রক্তদান কেন্দ্র ও একটিভ সিটিজেন উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয় ও বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সাঁকো নির্মানের জন্য অর্থ উত্তোলন করে। তারা স্থানীয়দের সহায়তায় একটি সুদর্শন সাকো নির্মান করে। সাকো নির্মানের বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে জীবননগর বন্ধু রক্তদান কেন্দ্র (স্বেচ্ছাসেবী
) এর সভাপতি সামিউল ইসলাম অভি ও সম্পাদক মিঠুন মাহমুদ জানান এ সাঁকোটি একটিভ সিটিজেনের উদ্যোগে সেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্ধু রক্তদান কেন্দ্র ও এ্যাকটিভ সিটিজেনের সহযোগিতায় জীবননগর পৌর এলাকার আশতলা পাড়ায় জীবননগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসার সুবিধার্থে এ সাঁকো নির্মান করা হয়।
সাঁকো নির্মান কাজের উদ্ধোধনী কাজে সে সময় উপস্থিত ছিলেন ছিলেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী কামরুজ্জামান যুদ্ধ ,হাসি খাতুন, বাঁকা ইউপি সদস্য আঃ মান্নান, সাংবাদিক চাষী রমজান, রায়হান মাসুদ, শুভ, মুরাদ, পাপ্পা, জনি, ইব্রাহিম, রনি, জ্যাকি, শাকিব হোসেন রবিন, রকি, লাবনী, মিম, নাছরিন, বন্যা, পুস্প, সোনিয়া খাতুন, সিমা সহ প্রতাপপুর গ্রামবাসী।

তারা জানান এ সাকো নির্মানের পর শিক্ষার্থী ও এলাকবাসী নির্বিঘ্নে পারাপারের সুবিধা পেয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীর সংগঠননের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা। এবং এমন উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে যুক্ত সকল সদস্যদেরকেও সাধুবাদ জানান।

এলাকাবাসী জানান সাঁকোটি উদ্ধোধনের ১ বছর অতিবাহিত হবার পরও এখানে এখনও পর্যন্ত স্থায়ীভাবে ব্রীজ নির্মান করার কোন ব্যাবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এদিকে সাঁকোটি অযত্ন আর অবহেলার কারনে ভেঙ্গে পড়তে বসেছে।
এ বিষয়ে জীবননগর উপজেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান জনাব হাফিজুর রহমান জানান, আমি জীবননগর আঁশতলা পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিষয়টি অবগত হয়ে সরজমিনে গিয়েছিলাম এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিনোদনের জন্য নিজস্ব তহবিল হতে অর্থব্যয় করে বিভিন্ন উপকরন প্রদান করেছি। এছাড়াও সাঁকো নির্মানের জন্য নিজ তহবিল হতে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করি। তিনি আরো জানান এ সাঁকোটি ভৈরব নদীর উভয় পার্শ্বের মানুষের যাতায়াতের জন্য এখন ব্যবহার হয়ে আসছে। এখন আর শিক্ষার্থীদেরকে কাঁদাপানি মেখে ক্লাস করতে হয়না। তিনি বলেন আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর মাননীয় এমপি হাজী আলী আজগর টগর মহোদয়ের মাধ্যমে এখানে একটি স্থায়ীভাবে ব্রীজ নির্মান করার চেষ্টা অব্যাহত রাখব। এবং এখানকার মানুষের জন্য ব্রীজটি নির্মান করতে পারলে আমি জনগনের আশা পুরন করতে সক্ষম হব।

পিবিএ/এমএম/হক

আরও পড়ুন...