স্মার্টফোন নির্মাণকারী সংস্থাগুলি অত্যাধুনিক ফিচারের পাশাপাশি হ্যান্ডসেটের ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়ানোর দিকে যথেষ্ট মনোনিবেশ করেছে। ফলে এখনকার বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনই ৫,০০০ বা ৬,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির বড়ো ব্যাটারি এবং ফাস্ট চার্জিং সাপোর্টের সাথে লঞ্চ হচ্ছে।
তবে এত শক্তিশালী ব্যাটারি থাকা সত্ত্বেও অনেক সময়ে দেখা যাচ্ছে, ফোনের ব্যাটারি খুব তাড়াতাড়ি ড্রেন হয়ে যাচ্ছে। এই সমস্যাটির জন্য গেমিং, ওয়েব মিটিং, ই-লার্নিং, অনলাইন পেমেন্ট বা মুভি ডাউনলোডের মতো কাজগুলিকে দায়ী করা যায়। তবে, এগুলি ছাড়াও বেশ কিছু ছোটোখাটো কারণেও ফোনের ব্যাটারি দ্রুত শেষ হতে পারে। তাই আজ আমার আপনাদের এমন ৫টি কৌশল জানাবো, যেগুলিকে অনুসরণ করার মাধ্যমে ডিভাইসের ব্যাটারি লাইফকে কিছুটা হলেও বুস্ট করা যাবে। তাহলে আসুন অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের ব্যাটারি লাইফ বাড়ানোর উপায় জেনে নেওয়া যাক।
১. ফোনের স্ক্রিন ব্রাইটনেস কম রাখুন : স্ক্রিন ব্রাইটনেস বাড়ানো থাকলে অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলির ব্যাটারির ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে হ্যান্ডসেটের ব্যাটারি ড্রেন হতে শুরু করে। তাই ব্যাটারিকে ড্রেন হওয়ার থেকে বাঁচাতে, আপনি ডিভাইসের স্ক্রিন ব্রাইটনেসকে অটোমেটিক চেঞ্জ মোডে সেট করতে পারেন। এর জন্য, অহফৎড়রফ চরব ৯.০ এবং তার পরবর্তী ওএস ভার্সনগুলিতে ব্রাইটনেস মোড অপশন উপলব্ধ করা হয়েছে।
২. অ্যাডাপটিভ ব্যাটারি বা ব্যাটারি অপ্টিমাইজেশন অপশন অন রাখুন : গুগল অপারেটিং সিস্টেমে ব্যাটারি লাইফকে আরো উন্নত করার জন্য প্রায়শই কোনো না কোনো নতুন ফিচার অ্যাড করা হয়ে থাকে। যার মধ্যে, অ্যাডাপটিভ ব্যাটারি বা ব্যাটারি অপ্টিমাইজেশন অপশনটি অন্যতম। এটিকে অন রাখলে, ব্যাকগ্রাউন্ডে সক্রিয় থাকা অ্যাপের মধ্যে থেকে যেগুলি অধিক ব্যাটারি ব্যবহার করে, সেগুলিকে আপনি ব্লক বা কন্ট্রোল করতে পারবেন। তাই ডিভাইসের ব্যাটারি লাইফকে বুস্ট করার জন্য এই অপশনটিকে ডিভাইস সেটিংসে গিয়ে অবশ্যই এনাবল করে দিন।
৩. ফোনের স্ক্রিন টাইম-আউটকে কম করুন : অনেক ইউজাররা তাদের স্মার্টফোনগুলির স্ক্রিন টাইম-আউটকে ১ মিনিট বা ২ মিনিটে সেট করে থাকেন। কিন্তু, ‘স্ক্রিন টাইম-আউট’ নামক এই ডিসপ্লে ফিচারটির সময়কে যদি ৩০ সেকেন্ডে কমিয়ে আনা যায় তাহলে, ডিভাইসের ব্যাটারি লাইফকে সামান্য হলেও বাড়ানো যাবে। সাথে, যে অ্যাপগুলি অতিরিক্ত ব্যাটারি ড্রেন করে তাদেরও বন্ধ করে দিন। এটি করলে আপনার ডিভাইসের ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী হবে।
৪. অব্যবহৃত অ্যাপগুলিকে বন্ধ বা ডিলিট করে দিন : আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে থাকা অ্যাপগুলির অ্যাকাউন্টে যদি লগ-ইন করা থাকে, তবে ব্যাটারি লাইফের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, এমন অনেক অ্যাকাউন্ট আছে যেগুলি ইন্টারনেট চলাকালীন ডিভাইসে থাকা ই-মেইল, ফটো এবং কন্টাক্টসের মতো ডেটাগুলিকে স্ক্যান করে। যার ফলে ফোন বেশি ব্যবহার করা না হলেও ব্যাটারি ড্রেন হতে থাকে। তাই যে অ্যাকাউন্টগুলিকে আপনি ব্যবহার করেন না সেগুলিকে বন্ধ বা ডিলিট করে দিন। এতে আপনার ডেটা এবং ব্যাটারি উভয়কেই বাঁচানো যাবে। আর যদি আপনি এই অ্যাপ তথা অ্যাকাউন্টগুলিকে বন্ধ না করতে চান তাহলে, অটো-সিঙ্ক অপশনটিকে ডিজেবল করে দিন।
৫. ‘ব্যাটারি সেভার’ অ্যাপের ব্যবহার কম করুন : গুগল প্লে স্টোরে এমন অনেক ভুয়ো অ্যাপ রয়েছে, যেগুলি আপনার ডিভাইসের ব্যাটারি লাইফকে বাড়ানোর দাবি করে। যার মধ্যে, “টাস্ক-কিলার” এবং “র্যাম-ক্লিনার” -এর মতো সফ্টওয়্যারগুলিও সামিল রয়েছে। এগুলি ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে সক্রিয় থাকা অ্যাপগুলিকে জবরদস্তি বন্ধ করে দেয়। তবে কিছু সময় পর দেখা যায় ওই অ্যাপগুলিকে পুনরায় অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেম সক্রিয় করে দিয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকল ডিভাইসের ব্যাটারি লাইফ অনেকটা কমে যায়। তাই ‘ব্যাটারি সেভার’ অ্যাপগুলির ব্যবহার না করাই উচিত।