বদলগাছীতে গরুর খাদ্য আঙ্গুর-আপেল-কলা

খালিদ হোসেন মিলু,বদলগাছী (নওগাঁ): দরিদ্ররা তো দূরের কথা, সচ্ছল একজন মানুষও প্রতিদিন নিয়ম করে আঙ্গুর-আপেল ও কলা ঠিকমতো খেতে পারে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। অথচ অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিজিয়ান জাতের একটি ষাঁড় গরুর এসব ফলমূল নিত্যদিনের খাবার। এসব ফলমূল খাওয়ানো ও সঠিক পরিচর্যার কারণে মাত্র ১৪ মাসেই এই গরুর ওজন হয়েছে ২৫ মণ। মালিক ভালোবেসে গরুটির নাম রেখেছেন ‘ক্যাপ্টেন’।

এবার ঈদুল আজহায় ক্যাপ্টেনকে হাটে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন গরুটির মালিক। গরুটি এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বড় হওয়ায় প্রায় প্রতিদিন আশপাশের বহু লোকজন ক্যাপ্টেনকে দেখতে আসছেন।
২৫ মণ ওজনের বিশাল এই গরুর মালিকের নাম মাসুদ হোসেন। তাঁর বাড়ি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার জগদীশপুর গ্রামে। তিনি একজন মুরগির খাদ্যের ব্যবসায়ী। জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার জামালগঞ্জ বাজারের জামালগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের পাশ্বে তাঁর মুরগির খাবারের দোকান রয়েছে।

সোমবার দুপুরে মাসুদ হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ১০-১২ জন দর্শনার্থী গরুটাকে দেখছেন। গরুর মালিক মাসুদ হোসেন গরুটির নিত্যদিনের খাবারের বর্ণনা দিচ্ছিলেন দেখতে আশা লোকজনদের। লোকজনের অনুরোধে ৪-৫ জন মিলে ক্যাপ্টেনকে বাড়ির বাইরে বের করে আনেন গরুর মালিক। ক্যাপ্টেন কিছুতেই বাইরে থাকতে চাচ্ছিল না। শুধু ছটফট করে চলছিল। একপর্যায়ে মাসুদ ক্যাপ্টেনের শরীর চিরুনি দিয়ে চুলকে দিলে তার ছটফটানো থেমে যায়।

মাসুদ হোসেন জানান, তিনি অনেকটা শখের বশে ১৪ মাস আগে জয়পুরহাটের পাঁচবিবির হাট থেকে ৮৫ হাজার টাকায় অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিজিয়ান জাতের এই বাছুর কিনেছিলেন। ঐ বাছুরকে প্রতিদিন ভুসি খাওয়ানোর পাশাপাশি আঙ্গুর, আপেল ও কলা খাওয়াতেন। এতে অল্পদিনে ষাঁড় বাছুরটি এত বড়সড় হয়ে যায়। বর্তমানে গরুটির ওজন ২৫ মণ। ভালোবেসে গরুটির নাম ক্যাপ্টেন রেখেছেন। প্রতিদিন ক্যাপ্টেনকে দেখতে আশে-পাশের অনেক লোকজন আসছেন।

মাসুদ বলেন, প্রথম দিকে প্রতিদিন ক্যাপ্টেনকে সাড়ে সাত শ টাকার ফলমূল ও ভুসি খাওয়াতাম। এখন প্রতিদিন সাড়ে চার শ টাকার বেশি খাবার খাচ্ছে। সেই অনুয়ায়ী গত ১৪ মাসে দুই লাখ টাকার বেশি খাওয়ানো বাবদ খরচ হয়েছে। আনুষঙ্গিক আরও দেড় লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। একজন গরু ব্যবসায়ী বাড়িতে এসে গরুটি দেখেছেন। দাম চেয়েছিলাম ১০ লাখ টাকা। ব্যাপারী ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বলেছিলেন। সাত লাখের নিচে ক্যাপ্টেনকে বিক্রি করবো না।’

জগদীশপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হামিদ বলেন, মাসুদ হোসেন তাঁর গরুকে প্রতিদিন আঙ্গুর-আপেল ও কলা খাওয়ান। অল্পদিনেই গরুটি বড়সড় হয়েছে। এখন গরুটির ওজন ২৫ মণ। আমাদের গ্রামে আগে কেউ এত বড় ষাঁড় লালন-পালন করেননি। প্রতিদিন আশে-পাশের অনেক লোকজন এই ষাঁড় গরুটি দেখতে আমাদের গ্রামে আসেন। এতে আমাদেরও ভালো লাগে।

পিবিএ/এসডি

আরও পড়ুন...