বরকে মারধর, কনের সুখের জন্য সকলের কান্না!

বিয়ের রাতে কন্যাকে যা শিখিয়ে দেন আদর্শ মা-নানিরা

পিবিএ ডেস্ক: এক কথাতেই বিয়ে হয়ে যায় না, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাতে থাকে বহু নিয়মকানুন, আচার অনুষ্ঠান। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিয়ে কেন্দ্রিক বিভিন্ন রকমের নিয়ম, প্রথা। একেক জাতি বা দেশ একেক রকমের নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে থাকে বিয়ের ক্ষেত্রে। সেটাই স্বাভাবিক। তবে কিছু দেশে এমন সব বিয়ের আচার-অনুষ্ঠান, প্রথা রয়েছে, যেগুলোর কথা শুনলে চোখ কপালে উঠবে!

কিছু দেশে এমন নিয়ম চালু রয়েছে, যা বিস্মিত করে দেওয়ার জন্যে যথেষ্ট। কোথাও বিয়ের এক মাস আগে থেকে কান্না শুরু করেন কনে ও তার বাড়ির মহিলারা, কোথাও আবার বরকে বেঁধে মারধর করা হয়, কোথাও আবার ময়লা ফেলা হয় নবদম্পতির গায়ে। চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক, পৃথিবীর অদ্ভূত কিছু বৈবাহিক রীতির বিষয়ে।

বিয়ে বাড়িতে এসে বরকে ধরে পেটানো দক্ষিণ কোরিয়ার একটি অংশে প্রাচীন প্রথা। বরকে মারার দায়িত্বটা মূলত বরের বন্ধুরাই নিয়ে থাকেন। বরের জুতা খুলে তার পায়ে দড়ি দিয়ে সজোরে মারতে থাকেন বন্ধুরা। দক্ষিণ কোরিয়ায় মনে করা হয়, এই পদ্ধতিতে বিয়ের দিন বরকে মারলে তাতে তিনি আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবেন আর স্ত্রীকে আগলে রাখতে পারবেন।

এ এক অদ্ভূত রীতি! বিয়ের দিনই সম্ভবত বর ও কনে তাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সাজটা সাজতে চায়। কিন্তু পৃথিবীর বুকেই রয়েছে এমন বিয়ের রীতি, যেখানে বিয়েতে বর এবং বিশেষত কনের সাজ নষ্ট করা হয়ে থাকে। তার জন্য নেওয়া হয় অভিনব পদ্ধতিও। মূলত স্কটল্যান্ডের একটা অংশে এই প্রথা মেনে চলা হয়।

এই প্রথা অনুযায়ী, ফলের খোসা, শ্যাওলা এবং আরো নানারকম ময়লা দিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করা হয়। এরপর সেই ময়লামিশ্রিত মিশ্রন বর-কনের সারা শরীরে ঢালা হয়। তারপর নব দম্পতিকে একটি গাছের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বেঁধে রাখা হয়। এতে নাকি দম্পতির জীবন সুখী হয়। ভাবা যায়, ময়লা ফেলে জীবনে সুখ ডাকা!

বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে নববধূ ও তার বাড়ির লোকজনের কান্নার দৃশ্য নতুন কিছু নয়। কিন্তু প্রথা মানতে কান্না, তাও আবার বিয়ের এক মাস আগে থাকতে! বিয়ের আগে যেমন মেহেন্দি, গায়ে হলুদের মতো অনুষ্ঠানের রীতি থাকে, তেমনই চীনের তুজিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে চালু রয়েছে আজব রীতি। সেই অনুসারে কনেরা বিয়ের আগে থেকে কান্নার অনুষ্ঠান পালন করে। তাও আবার বিয়ের এক মাস আগে থেকে। প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে কান্নাকাটি করতে হয় তাদের। কনে কান্না শুরু করার ঠিক ১০ দিন পর কনের মা তার সঙ্গে কান্নায় যোগ দেন। এর কিছুদিন পর থেকে যত মহিলা আত্মীয়রা আছেন, সকলেই একসঙ্গে কাঁদতে শুরু করেন। এতে নাকি কনের পরবর্তী জীবনে কান্না নয়, কেবলই থাকে হাসি।

এই রীতি যতটা না ঐতিহ্যের, তার থেকে বেশি বোধহয় মজার। তবে, এই মজা করতে গিয়ে কখনো কখনো মারাত্মক আকারও ধারন করতে পারে। কারণ আপনার জীবনসঙ্গী বা সঙ্গীনিকে যদি আপনার বন্ধুরাই বিয়ের দিন চুমু খেয়ে বসেন! সুইডেনে কিন্তু বহু বছর ধরে চালু রয়েছে এই রীতি। এই প্রথা অনুযায়ী, বিয়ের আসর ছেড়ে বর যদি একটু বাইরে বা বাথরুমে যান, তাহলে সঙ্গেসঙ্গে বরের বন্ধুরা কনেকে চুমু খেতে শুরু করেন। উল্টোটাও অবশ্য রয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী কনে যদি বিয়ের আসর থেকে একটু অন্য কোথাও যান, তাহলেই মুহূর্তের মধ্যে কনের বান্ধবীরা এসে বরকে চুম্বন করতে শুরু করেন।

বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের ফেলা দেওয়া সব খাবার সদ্য বিবাহিত বর-কনকে খেতে দেওয়া হয়। ফ্রান্সের বেশ কিছু জায়গায় এখনো চালু রয়েছে এই নিয়ম।

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...