বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন ও রাজনৈতিক সরকারকে দায়িত্ব দেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনাগুলোতে আগামী নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফেরার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশে গত ৫ আগস্ট প্রবল আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চলমান পরিস্থিতি, সংস্কারের উদ্যোগ, উগ্রবাদের উত্থানের সুযোগ, প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সফর করেন। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনসহ মার্কিন প্রতিনিধিরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন। প্রধান উপদেষ্টার ওই সফরের পর পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি সফরকালে হোয়াইট হাউস, পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্প্রতি একাধিক আলোচনায় নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবনা জানতে চেয়েছেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন মনে করে, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হলে সেটি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য ভালো হবে। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন মনে করে, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দেশ ও বিদেশে সমর্থন রয়েছে। কিন্তু যত বেশি দেরি হবে, এই সমর্থন কমে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। ফলে দ্রুত সংস্কার নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা প্রকাশ করা এবং নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন খাতে সংস্কার নিয়ে কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তারা তাদের রিপোর্ট দেবে। ওই রিপোর্টগুলোর আলোকে সরকারের পরিকল্পনা সবাইকে জানানোর বিষয়ে জোর দিয়েছে তারা।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, গত আগস্টে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের প্রাক্কালে আন্দোলন এবং পরবর্তী সময়ে এমন কিছু ব্যক্তি কারামুক্ত হয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে উগ্রবাদের অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশে উগ্রবাদের উত্থানের ঝুঁকি আছে কি না, সে বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। গত ৫ আগস্টের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কী প্রভাব পড়েছে সে নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ রয়েছে।