বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ সময় পার করছে


শতাব্দী আলম : করোনা ভাইরাস একটি দেশে প্রথম সংক্রমণের এক থেকে দেড় মাস পরে বড় ধরনের উত্থান ঘটেছে। ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এপ্রিলের মাঝামাঝি এসে ১ মাস ১০ দিন সময়ে আক্রান্ত সংখ্যা ১ হাজার ৮৩৮ জন। মারা গেছে ৭৫ জন। একই পরিসংখ্যান বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অনুমান করলে আগামী মাসাধিককাল বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ।

তবে ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, জার্মানী, নেপাল, ভুটান, ভারতের কেরালাসহ অনেক দেশেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে এই মহামারি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে।

বাংলাদেশর প্রতিটি মানুষের উচিত সরকারের নির্দেশ মান্য করা। শুধুমাত্র সামাজিক দূরত্ব না শারিরিক দূরত্ব বজায় রাখাও জরুরী।

পিবিএ ডেস্ক করোনাকালের দিনগুলোর দেশ বিদেশের প্রতি মুহুর্তের খবরাখবর পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত রয়েছে। আক্রান্ত শীর্ষ দেশগুলোয় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এখানে দেখা যাচ্ছে, অন্যান্য দেশে ১ থেকে দেড় মাস পরে আক্রান্ত সংখ্যায় বড় ধরনের উত্থান ঘটেছে।

২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র, ২৩ জানুয়ারি ফ্রান্সে, ২৯ জানুয়ারি ইতালি, ৩০ জানুয়ারি স্পেন, ২৬ জানুয়ারি জার্মানি ও প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তবে মার্চে এসে দেশগুলোয় করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে ।

এশিয়ার দেশে নেপালে ২৩ জানুয়ারি প্রথম করোনা-আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করে। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে মাত্র ১৬ জন। ২৬ জানুয়ারি করোনা শনাক্ত হয় শ্রীলঙ্কায়। এখন সেখানে রোগীর সংখ্যা ২৩৮। ২৯ জানুয়ারি ভারত, ২৩ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তান, ২৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান, ৫ মার্চ ভুটান, ৬ মার্চ মালদ্বীপ ও সর্বশেষ ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়।

করোনা আক্রান্ত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ১১ জানুয়ারি করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘোষণা দেয় চীন। ভাইরাসটি ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়তে থাকে। ১৯ মার্চ প্রথম একদিনে এক হাজার ছাড়ায় মৃত্যু। ওই দিনে মারা যায় এক হাজার ৭৯ জন। এপ্রিলে এসে ভয়াবহ রূপ নেয় করোনা। ২ এপ্রিল প্রথম একদিনে ৫ হাজার ছাড়ায় মৃত্যু। আর ১০ এপ্রিল ছাড়িয়ে যায় ১০ হাজার। এরপর একটু কমলেও এপ্রিলে গড়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ৬ হাজারের বেশি মানুষ।

ডিসম্বেরের শেষ দিকে চীনে শুরু হয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এরপর এটি ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ৬৭ দিনের মাথায় ১ লাখ লোকের করোনা শনাক্ত হয়। ইউরোপ ও আমেরিকায় করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর মার্চের শেষদিকে আক্রান্তের হার বাড়তে শুরু করে। তিন মাসের মাথায় ৩১ মার্চ গিয়ে ৮ লাখ ছাড়ায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা। আর এপ্রিলের ১৭ দিনেই করোনা শনাক্ত হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব করোনা পরিস্থিতির প্রতিমুহুর্তের আপডেট জানাচ্ছে। তাদের সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ১৮৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ২২ লাখ ছাড়িয়েছে করোনাভাইরাস শনাক্ত মানুষের সংখ্যা। একই সময়ে মারা গেছে দেড় লাখের বেশি মানুষ।

বিশ্ব পরিস্থিতি বিশ্লেষনে এটাই প্রতিয়মান। সামাজিক দূরত্ব মেনে সংক্রমণ এড়ানোই উত্তম। যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি আমলে না নিয়ে এখন এর জের টানছে। আক্রান্ত বা মৃত্যু সব দিকেই যুক্তরাষ্ট্র বেশী। দেরিতে হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার কিছু ভাল পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা করোনা যুদ্ধকালে রয়েছি। বাঙালি হিসাবে সব সময়ই যুদ্ধ জয়ী। করোনা যুদ্ধেও আমরা জয়ী হবো। তবে তা নির্ভর করে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে ঘরে থাকার উপর।

পিবিএ/ঢাকা

আরও পড়ুন...