বাগেরহাটে বিদ্যুতের স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার সংযোগ

পিবিএ,বাগেরহাট: বাগেরহাটে বিদ্যুতের স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার সংযোগে খুশি গ্রাহকরা। ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)-এর “স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারিং” প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাট পৌরসভার ১৫ হাজার ২‘শ ৭২ জন গ্রাহককে পুরাতন মিটার পরিবর্তন করে স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দেয়ার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৮ হাজার ৭৬ জন গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। উন্নত প্রযুক্তির এ মিটার পেয়ে গ্রাহকরা নিজেরাই তাদের বিদ্যুৎ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও বিল প্রদান করতে পারছে।

মিটার
বিদ্যুতের স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার সংযোগ

সনাতন পদ্ধতিতে মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে ব্যাংকে গিয়ে লাইনে আর দাড়াতে হবে না। ঘরে বসে নিজ মোবাইলের মাধ্যমে রিচার্জ করেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারে। তেমনি সরকারও সঠিক সময়ে রাজস্ব পাবেন। এসব সুযোগ সুবিধার ফলে গ্রাহকরা স্বতস্ফুর্তভাবে প্রি-পেইড মিটার নিচ্ছেন। বিদ্যুৎ বিভাগ আধুনিকায়নের এ প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্যাংকগুলোও। প্রি-পেইড মিটার সংযোগ পেয়ে গ্রাহক রুহুল আমিন মিন্টু বলেন, এ মিটার ব্যবহারে আমাদের কত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে এবং কত টাকা ব্যয় হচ্ছে তা দেখতে পাচ্ছি, যার ফলে আমরা বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ি হতে পারছি।

এছাড়া ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাড়িয়ে বিল পরিশোধের বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না, ঘরে বসেই বিল পরিষোধ করতে পারছি। দিন মজুর শহিদুল ইসলাম বলেন, মাস শেষে এক সাথে বিল দিতে গিয়ে অনেক সময় হিমশিম খেতাম। স্মার্ট মিটারে যখন প্রয়োজন তখন অল্প অল্প করে টাকা রিচার্জ করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারছি। এতে আমার অনেক সুবিধা হয়েছে।

ব্যবসায়ী আলতাপ হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ বিল সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা ছিল না। অফিস থেকে যে বিল প্রদান করা হত সে পরিমান বিলই আমাদের দিতে হত। স্মার্ট মিটারে আমরা নিজেরাই প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি কি পরিমান বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে এবং কত টাকা ব্যয় হচ্ছে। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক বাগেরহাট শাখার ব্যবস্থাপক পিন্টু কুমার সাহা বলেন, বিদ্যুৎ বিল দিতে আসা গ্রাহকদের যথেষ্ঠ সেবা দিয়েছি। বর্তমান সরকারের স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার সংযোগের উদ্যোগ নিসন্দেহে ভাল।

এ জন্য ব্যাংকের উপর কোন প্রভাব পড়বে না। বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ, ওজোপাডিকো, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ঘোষ বলেন, সকল গ্রাহকদেরকে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮ হাজার ৭৬ জনকে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দিয়েছি। প্রতিদিন ৩‘শ গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার প্রদান করা হচ্ছে। জুন মাসের মধ্যে সকল গ্রাহকের কাছে স্মার্ট মিটার পৌছে দিতে পারব বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগকে আধুনিকায়নের জন্য সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। যার মধ্য দিয়ে গ্রাহক ও বিদ্যুৎ বিভাগের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। এমিটার ব্যবহারে গ্রাহকদের বিল দেয়ার ঝামেলা থাকবে না। মিটারটি এমনভাবে তৈরি যাতে বাড়িতে বা প্রতিষ্ঠানে সর্ট সার্কিট হলে সংশ্লিষ্ট মিটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

এ মিটার ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে বাগেরহাট (ওজোপাডিকো)বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ ঘোষ বলেন, মিটারে গ্রাহকের টাকা না থাকলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তবে টাকা না থাকলে সরকারি ছুটি ব্যতিরেকে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে একশ টাকা পর্যন্ত এমার্জেন্সি ব্যালান্স গ্রহন করতে পারবেন গ্রাহকরা।

এছাড়া সরকারি ছুটির দিন এবং বিকেল ৪টা থেকে সকাল ১০টার মধ্যে ব্যালান্স শেষ হলেও বিদ্যুৎ চালু থাকবে। তবে পরবর্তী রিচার্জে ব্যবহৃত বিদ্যুতের বিল সমন্বয় করে নিবে। এই মিটার ব্যবহারে সরকার সঠিক সময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে রাজস্ব পাবে বলে মনে করেণ এ কর্মকর্তা।

পিবিএ/এসএইচ/আরআই

আরও পড়ুন...