বাগেরহাটে ৬৯৬ কোটি টাকার নতুন বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটল!

আহসান টিটু, ফকিরহাট : চলছে বেড়িবাঁধ নির্মাণ, ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে ইতোমধ্যে। তবে কাজ শেষ না হতেই তা আবার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

৮ মে, শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সিডর অধ্যুসিত সাউথখালী ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ বোল্ডারের গাবতলা আশার আলো মসজিদ সংলগ্ন বলেশ্বর নদীতে তীব্র ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে কয়েক বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভয়াবহ ফাটল ধরে নির্মিতব্য বেড়ীবাঁধে।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে পরিদর্শনে আসেন বিশ্ব ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। এসময়ে গাবতলা, বগী ও চালেতাবুনিয়া গ্রামকে নদীর প্লাবন থেকে রক্ষা করতে রিং বাদ দেয়ার চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ব ব্যাংকের কনসালটেন্ট দেলোয়ার হোসেন ও লাকিদুল ইসলাম বলেন, বাঁধ নির্মাণ কাজের চায়নার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আরো এক বছর কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু সাউথখালী ইউনিয়নের বগী এলাকায় বলেশ্বর নদীর ভাঙ্গনের ফলে ডিজাইন পরিবর্তন করে বাধের জন্য ২ কিলোমিটার জায়গার জমি নতুন করে অধিগ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। দীঘদিনেও সেটি পাশ না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে বাঁধ নির্মাণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আসন্ন বর্ষা মওশুমে ভাঙ্গনকবলীত এলাকায় আপদকালীন রিংবাধ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে গ্রামাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে মানুষের বাড়ীঘর তলিয়ে না যায়।

ভাঙ্গন প্রবন এলাকার এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আঃ বারেক বলেন, দিন দিন শত শত বিঘা জমি আকস্মিক ভাবে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদী শাসন না করে বেড়িবাঁধ নির্মান করা হলে আবার ভেঙে যাবে। এই বেড়িবাঁধে আমাদের কোন উপকার হবে না।

বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান শাওন বলেন, আমি সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, অবিলম্বে নদী শাসন করা হোক। না হলে সরকারের শত শত কোটি টাকা খরচ হবে কিন্তু আমরা নিরাপদ হবো না।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) ‘সিইআইপি’ প্রকল্পের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ২০১৬ সালে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৪ টি পোল্ডারে ৬৯৬ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে চায়নার ‘সিএইচডব্লিউই’ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ৪ বছর ধরে ৩৫/১ পোল্ডারে বেরীবাধ নির্মান কাজের ৮০ ভাগ কাজ বাস্তবায়ন করেছে। জমি অধিগ্রহনের জটিলতা ও করোনা পরিস্থিতির কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। আবার সময় বাড়ানোর আবেদন করা হবে বলে তিনি জানান।

পিবিএ/আহসান টিটু/এমএ

আরও পড়ুন...