বাঘাইছড়ি হত্যা পূর্ব পরিকল্পিত: সিইসি

বাঘাইছড়ি হত্যা
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বাঘাইছড়ি হত্যা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা

পিবিএ, রাঙ্গামাটি: রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে ভোট কর্মকর্তাদের বহরে গুলির ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত বলে মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, নিরাপত্তার কোনো অভাব ছিল না।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) গিয়ে বাঘাইছড়ির ঘটনায় আহতদের দেখে আসার পর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, দুষ্কৃতকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে জায়গা বেছে নিয়ে হামলা চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে গেছে।

সোমবার উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার তিনটি কেন্দ্র থেকে নির্বাচনকর্মীরা ফেরার পথে তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়।

বাঘাইছড়ি-দিঘিনালা সড়কের নয় মাইল এলাকায় ওই হামলায় দুই পোলিং কর্মকর্তা, চার আনসার-ভিডিপি সদস্যসহ সাতজন নিহত হন, গুলিবিদ্ধ হন আরও অন্তত ১১ জন।

কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘এই ঘটনায় কারা দায়ী এবং কেন ঘটনা ঘটল আমরা এখনো জানি না। ঘটনার কারণ বের করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি। ডিআইজি সাহেবকেও একটু আগে বলেছি। তাঁরা তৎপর আছেন। এই ঘটনার তদন্ত হবে। যারা দায়ী, তাদের বের করে আইনের মুখোমুখি করা হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় কোনো গাফিলতি ছিল না। সর্বোচ্চ সতর্কমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি—সবাই ছিল। তাঁরা গাড়ি স্কট করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পেছন থেকে আক্রমণ করা হয়। আর যে জায়গায় হামলা করা হয়, সেখানে সংকীর্ণ রাস্তা আছে। নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত লোকজনের গাড়ি ঘুরিয়ে আনা সম্ভব ছিল না। তবে পেছনে পুলিশও ছিল। এই হামলায় পুলিশ সদস্যও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। দুষ্কৃতকারীরা সুযোগ বুঝে এ হামলা ঘটিয়েছে।

এসময় সিইসির পাশে উপস্থিত চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডিআইজি সৈয়দ গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, পাহাড়ে বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক দল আছে; ‘চাঁদাবাজি ও আধিপত্য নিয়ে’ তাদের মধ্যে বিরোধ আছে।

“এসব কারণে নানিয়ারচরসহ কয়েকটি জায়গায় ঘটনা ঘটেছে। তারা মনে করেছে যারা শক্তি প্রদর্শন করতে পারবে তারাই জাতীয় ও উপজেলা নির্বাচনে বেশি ভোট পাবে।”

ডিআইজি বলেন, “আগে আঞ্চলিক দলগুলো কেন্দ্র দখলে নিয়ে নিজেদের প্রার্থীকে জয়ী করার চেষ্টা করত। এবার সেটা পারেনি। এটা তারই বহিঃপ্রকাশ হতে পারে।”

পার্বত্য অঞ্চলের ‘মূল সংকট রাজনৈতিক’ মন্তব্য করে ডিআইজি গোলাম ফারুক বলেন, “আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করব। সেইসাথে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে যৌথবাহিনীর অভিযানের ব্যবস্থা করব।”

চট্টগ্রামে বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...