পিবিএ ডেস্ক: মুসলমানদের জন্য নতুন একটি মসজিদ নির্মাণে আলাদা জমি বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির প্রধান বিচারক রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতির ভিত্তিতে শনিবার এই রায় দিয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।
এর আগে এক শতকের পুরনো অযোধ্যা বাবরি মসজিদের রায় পড়তে শুরু করেন বিচারকরা।
এক দশক আগে আল্লাহাবাদ হাইকোর্টে হিন্দু ও মুসলমান মকদ্দমাকারীদের মাঝে জায়গাটি আনুপাতিক হারে ভাগ করে দেয়ার রায় দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে ওই বিচারের বিরুদ্ধে দুই পক্ষই উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।
আল্লাহবাদ হাইকোর্টের ওই রায়ে যৌক্তির অভাব ছিল বলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা দাবি করেন। শীর্ষ কোর্ট বলেন, পুরো জমিটিকে সামগ্রিক ভূখণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করতে হবে। মুসলমানরা জমির ওপর নিজেদের অধিকার প্রমাণে সক্ষম হয়নি বলে শীর্ষ আদালত দাবি করেন। বিরোধপূর্ণ ধর্মীয় স্থানটির রায়কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েক হাজার অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
তাদের সহায়তা করতে ১৬ হাজার ডিজিটাল স্বেচ্ছাসেবকও রয়েছেন, সামাজিকমাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট মোকাবেলায় তারা কাজ করবেন। উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় ১৬ শতকের বাবরি মসজিদটি নিয়ে হিন্দু ও মুসলমানরা কয়েক দশক ধরে তিক্ত বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন।
হিন্দুদের বিশ্বাস, তাদের দেবতা রাম ওখানে জন্ম নিয়েছে। ১৯৯২ সালে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা মসজিদটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। তখন দাঙ্গায় দুই হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছেন।
ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ১৭ নভেম্বর অবসরের আগেই জায়গাটির মালিকানার দাবি নিয়ে মামলার রায় দেবেন বলে প্রত্যাশা করা হয়েছিল।
অযোধ্যার বাবরি মসজিদের মালিকানার মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে বিতর্কিত জায়গাটি হিন্দুদের। খবর দ্যা হিন্দু। রায়ে মুসলমানদের জন্য ৫ একর বিকল্প জায়গা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভারতের স্থানীয় সময় আজ সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেন। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়া, অশোক ভূষণ এবং এস আবদুল নাজির।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছেন, মসজিদটি ফাঁকা জায়গায় তৈরী হয়নি। এর নিচে কোন স্থাপনা ছিলো। তবে তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি অর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। তবে সেটা মন্দির কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয়। তিনি আরও বলেন, ১৯৯২ সালে মসজিদটি ভাঙা আইনের লঙ্ঘন ছিলো।
এর আগে গত ৬ই আগস্ট থেকে কোনও বিরতি ছাড়া টানা শুনানি চলেছে অযোধ্যা মামলার। তার পর ১৬ই অক্টোবর রায়দান সংরক্ষিত রেখেছিল শীর্ষ আদালত। শুক্রবার আচমকাই সুপ্রিম কোর্ট জানায়, আজ শনিবার রায়দানের কথা। তার আগে নিজের চেম্বারে ডেকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব এবং ডিজির সঙ্গে কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
রায় ঘিরে অশান্তি এড়াতে কড়া নিরাপত্তা জারি হয়েছে গোটা উত্তরপ্রদেশে। সোমবার পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত স্কুল কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই নির্দেশ জারি হয়েছে কর্নাটক ও মধ্যপ্রদেশেও। অন্য দিকে সব রাজনৈতিক দল ও সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন।
পিবিএ/জেডআই