পিবিএ,কুমিল্লা: রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরুর মরদেহ এখন কুমিল্লার পথে। যে সংসদীয় আসন (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) থেকে তিনি ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সেই এলাকায় আরও ৩টি স্থানে জানাজা ও সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাদ আসর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মীরপুর গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করার কথা রয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন জানান, আমাদের সকলের প্রিয় খসরু ভাইয়ের দুটি জানাজা এরই মধ্যে ঢাকায় শেষ করে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স এখন কুমিল্লার পথে। বাদ জোহর বুড়িচং আনন্দ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তৃতীয় জানাজা, বিকাল ৪টায় ব্রাহ্মণপাড়া ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৪র্থ জানাজা এবং সর্বশেষ একই উপজেলার মীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বাদ আসর পঞ্চম জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে।
এর আগে বুধবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবদুল মতিন খসরু। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
ব্যক্তিজীবনে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কে এই আবদুল মতিন খসরু?
আবদুল মতিন খসরু ১৯৫০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মিরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মো. আবদুল মালেক এবং মা জাহানারা বেগম। তারা চার ভাই, এক বোন। আবদুল মতিন খসরু ব্যক্তিজীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
আবদুল মতিন খসরু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে কুমিল্লা বার অ্যাসোসিয়েশনে যোগদান করেন। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে নিয়মিত প্র্যাকট্রিস শুরু করেন।
মতিন খসরু কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) সংসদীয় আসনে ১৯৯১-১৯৯৬, ১৯৯৬-২০০১, ২০০৯-২০১৪, ২০১৪-২০১৮ ও ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল মতিন খসরু।
তিনি আইনমন্ত্রী থাকাকালে ১৯৯৬ সালে সংবিধান ও মানবতাবিরোধী কালো আইন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যবস্থা করেন, যার ধারাবাহিকতায় পরবর্তীকালে সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারবর্গের আত্মস্বীকৃত খুনীদের ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হয়।
পিবিএ/জেডএইচ